মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে পিটিআইয়ের বেশিরভাগ নেতাই 'নকআউট', বাদ ইমরান এবং কুরেশিও
পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানসহ পিটিআই ও এর মিত্র দলগুলোর ৯০ শতাংশ নেতাই বাদ পড়েছেন। গতকাল শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয় দেশটির নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের আগে এটি দলগুলোর জন্য বড় একটি ধাক্কা হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।
তবে আগামী বুধবার (৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রার্থীরা আপিল করতে পারবেন। ১০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের আপিলের রায় দেবে নির্বাচন কমিশন।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের বেশিরভাগই পিটিআইয়ের। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে গত ৯ মে দাঙ্গার ঘটনায় মামলা চলছে।
৭১ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর তিনি রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে গত আগস্টে আদালত তাকে তিন বছরের সাজা দেন। তখন থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন।
জাতীয় পরিষদের দুইটি নির্বাচনী এলাকা লাহোরের এনএ-১১২ ও নিজ শহর মিয়ানওয়ালির এনএ-৮৯ নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ইমরান খান। দুটি আসনেই তার মনোয়নপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়।
মিয়ানওয়ালির ইসাখেলের সহকারী কমিশনার গুলাম মুর্তাজা ডনকে বলেন, তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়াসহ আরো কিছু কারণে এনএ-৮৯ আসনে ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তাই এ আসন থেকে তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।
একই কারণে এনএ-১২২ (লাহোর-৬) আসন থেকেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে মুলতানের এনএ-১৫০, এনএ-১৫১ ও পিপি-২১৮ আসন (পাশাপাশি সিন্ধু প্রদেশের থারপারকারের এনএ-২১৪) থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি। তিনিও এখন কারাগারে। তার মনোনয়নপত্রও বাতিল করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বাতিল হয়েছে তার ছেলে জেইন কুরেশি ও মেয়ে মেহের বানু কুরেশির মনোনয়নপত্রও।
পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ এলাহি, তার স্ত্রী কায়সারা বিবি ও ছেলে মুনিস এলাহির মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। চকওয়াল আসনের আরেক প্রার্থী কলামিস্ট আয়াজ আমীরের মনোনয়নপত্র যাচাইয়ে বাদ পড়েছেন।
ডনের খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানওয়ালিতে পিটিআইয়ের সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্রই বাতিল করা হয়েছে।
পিটিআইয়ের নারী শাখার নেত্রী আমারা নিয়াজিসহ এনএ-৯০ আসনের এক প্রার্থীরও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
এনএ-১২৫ (লাহোর) আসনে জামশেদ ইকবাল চিমা, তার স্ত্রী মুসারাত জামশেদ চিমা ও জামিল আসগর ভাট্টির মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
একইভাবে এনএ-১৩০ আসনে ড. ইয়াসমিন রশিদ এবং পিপি-১৭২ আসনে হাম্মাদ আজহারও মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন।
পিটিআইয়ের পাঞ্জাবের সাবেক গভর্নর গোলাম মুস্তাফা খার, তার স্ত্রী আবনিয়া মুস্তাফা খার এবং পিটিআই নেতা জামশেদ দাস্তি, উসমান দার মা রেহানা ইমতিয়াজ দার, তার পুত্রবধূ আরুবা দার, ফাওয়াদ চৌধুরী, হিবা ফাওয়াদ, জুলফি বুখারি, আলী আসজাদ মালহি, রাই হাসান নওয়াজ, ইজাজ চৌধুরীসহ সারগোদা ডিভিশনের দলটির বহু শীর্ষ নেতার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
এছাড়াও সিন্ধু, খাইবার পাখতুনখোয়া, বেলুচিস্তান অঞ্চলে বহু পিটিআই নেতাও বাদ পড়েছেন।
তবে তুলনামূলক কম প্রভাবশালী কিছু পিটিআই নেতার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে পিটিআইয়ের মিত্র শেখ রশিদ এবং তার ভাগ্নে রশিদ শফিকসহ আরো অনেক শীর্ষ নেতাও রয়েছেন।