হঠাৎ তুষারপাত আর ভারী বর্ষণে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৩৫ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানে হিমশীতল বৃষ্টি এবং অপ্রত্যাশিত তুষারপাতের ফলে কমপক্ষে ৩৫ জন মারা গেছেন এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২২ জন শিশু। এদের অনেকে ভূমিধসে নিজের বাড়িতেই চাপা পড়ে মারা গেছে।
চরম আবহাওয়ার কারণে পাকিস্তানের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে এবং শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বছরের এই সময়ে তুষারপাত দেখে অবাক হয়েছেন, কারণ পাকিস্তান সাধারণত মার্চ মাসে উষ্ণ থাকে।
দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মুশতাক আলী শাহ, এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
তিনি আরও বলেন, 'কয়েক মুহূর্তের জন্য' হালকা শিলাবৃষ্টি হলে তাতে তেমন অবাক হওয়ার কিছু নেই, কিন্তু ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে তা চলতে থাকাটা অস্বাভাবিক।
বিবিসির আবহাওয়াবিদ ক্রিস ফকস জানান, গত কয়েকদিন ধরে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও উত্তরপশ্চিম ভারতের ওপর দিয়ে একটি পশ্চিমি ঝড় বয়ে যাচ্ছে। যার ফলে এই অঞ্চলে চরম ঠান্ডা, ভারী তুষার এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাত ঘটছে।
যা দেখে অবাক হয়েছেন স্থানীয়রা।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কির্ক জেলার বাসিন্দা হাজিত শাহ বলেন, তিনি এর আগে একবারই তার এলাকায় তুষারপাত দেখেছেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, 'আমার যতদূর মনে পড়ে, প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে কয়েক মিনিটের জন্য হালকা তুষারপাত হয়েছিল।'
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে খাইবার পাখতুনখোয়া ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে অন্তত ১৫০টি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এবং ৫০০ ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে কয়েকটি জেলা পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করেছে এবং আহত ও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ তার সাপ্তাহিক পূর্বাভাসে বলেছে, এই সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে দেশের বেশিরভাগ অংশে 'প্রধানত ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া' বিরাজ করতে পারে।
তবে বেলুচিস্তান ও কাশ্মীরের কিছু অংশে 'পাহাড়ের উপরে তুষারপাত' হতে পারে।
সংক্ষেপিত ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি