সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের
গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক পরিষদে শুক্রবার একটি রেজ্যুলেশন (প্রস্তাব) পাশ হয়েছে।
তবে ইসরায়েল প্রস্তাবটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে পাকিস্তান এ প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ প্রস্তাবের পক্ষে ২৮টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিসহ ৬টি দেশ। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ১৩টি দেশ।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের স্থায়ী প্রতিনিধি মিরাভ ইলন শাহার, কাউন্সিলকে 'দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের জনগণকে পরিত্যাগ করা এবং হামাসকে দীর্ঘকাল ধরে রক্ষা করার' অভিযোগ করেছেন।
ভোটের আগে তিনি বলেন, 'আজ আপনাদের সামনে যে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে, তাতে ইসরায়েলের তার জনগণকে রক্ষার কোনো অধিকার নেই। অন্যদিকে হামাসের নিরপরাধ ইসরায়েলিদের হত্যা ও নির্যাতনের অধিকার রয়েছে। এ প্রস্তাবের পক্ষে হ্যাঁ ভোট হলো হামাসের পক্ষে ভোট।'
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম খরাইশি এ ভোটকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন যে কিছু ইউরোপীয় রাষ্ট্র এটিকে সমর্থন করেনি।
তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে সবাই ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু আমরা যখন ইসরায়েল সম্পর্কে কথা বলি, তখন সেই অবস্থান পরিবর্তন হয়।'
যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে, তবে দেশটি বলছে, তার মিত্র ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক লোকদের ক্ষতি কমাতে যথেষ্ট কাজ করেনি।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি মিশেল টেইলর বলেছেন, গাজায় বেসামরিক লোকদের হতাহত হওয়া বন্ধ ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের জন্য ইসরায়েলকে বার বার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এতে কাজ হয়নি। গত ৬ মাসে এ যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকারকর্মী নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলে বাহিনী প্রায় ছয় মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালাচ্ছে। নির্বিচার এ হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রস্তাব পাসের মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে এবারই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান নিল মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিষদ।