যুদ্ধ অস্থিরতার এই সময়ে পশ্চিমা দুনিয়ায় ভৌতিক-হরর উপন্যাসের বিক্রি বেড়েছে
২০২৩ সালে রেকর্ড সংখ্যক হরর উপন্যাস বিক্রি হয়েছে। বুকসেলারের তথ্যমতে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হরর ও ভৌতিক গল্পের বই বিক্রির পরিমাণ ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৭.৭ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে। রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে যা সর্বোচ্চ।
নিলসেন বুকস্ক্যানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যে পরিমাণ হরর ও ভৌতিক উপন্যাস বিক্রি হয়েছে, মূল্যের দিক থেকে সেটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি।
হরর লেখক ও প্রকাশকরা বলছেন, বিক্রয় বাড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো এ ধারার উপন্যাস বা গল্পের রাজনৈতিক প্রকৃতি।
হরর লেখক জেন উইলিয়ামস বলেন, 'হরর এমন এক ধারা, যেটি প্রায়শই সমাজের ভয় ও উদ্বেগগুলো প্রতিফলিত করে এবং বাস্তব-বিশ্বের সমস্যাগুলোর অন্ধকার প্রতিচ্ছবি হিসেবে কাজ করে।'
তিনি বলেন, 'আমরা এখন অস্থির এক বিপর্যয়ের সময়ে রয়েছি: যুদ্ধ, মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন। হরর আবার স্পটলাইটে ফিরছে এবং বিপুল সংখ্যক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাচ্ছে।'
ভার্ভ বুকসের ক্যাম্পেইনের পরিচালক সারাহ স্টুয়ার্ট-স্মিথ বলেন, 'নতুন নতুন হরর বইতে একটি স্বতন্ত্র নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উপস্থাপন দেখা যায়। টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই প্রবণতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।'
তিনি বলেন, সম্মতি, মাতৃত্ব এবং সীমালঙ্ঘনের গল্পগুলো 'ব্যাপক জনপ্রিয়তা' পেয়েছে। পাঠকরা 'নারীদের ক্রোধের অভিব্যক্তি এবং দীর্ঘদিন ধরে চাপা থাকা কোনো বিষয় প্রকাশ হলে কি ঘটে'- এমন সব গল্প পাঠকদের আকৃষ্ট করে। আর এসব বিষয় হরর ধারার গল্পগুলো 'উপযুক্তভাবে' পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারে।
আরেক ঔপন্যাসিক জেন ফ্লেট বলেন, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী আমরা যেসব আঘাতদায়ক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি, তারই প্রতিক্রিয়ায় হররকেন্দ্রীক বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। যখন সবকিছুই ঝুঁকিপূর্ণ, তখন অন্ধকারের বিরুদ্ধে লুকিয়ে থাকার মধ্যে একটি বিকৃত স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে। তবে আরও নির্দিষ্টভাবে, আমার জন্য বিচিত্র বা অস্বাভাবাবিক হরর এমন একটি জায়গা তুলে ধরে যেখানে আমি শক্তি ও শক্তিহীনতা উভয়ের সঙ্গে খেলতে পারি।'
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক