গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান নিহত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আল জাজিরা (আরবি) সাংবাদিক ইসমাইল আল-ঘৌল এবং তার ক্যামেরাম্যান রামি আল-রিফি নিহত হয়েছেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গাজা শহরের পশ্চিমে আল শাতি শরণার্থী শিবিরে বুধবার (৩১ জুলাই) তাদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালানো হলে তারা দুজন নিহত হন।
ইরানের রাজধানী তেহরানে বুধবার ভোরে নিহত হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার গাজার বাড়ির কাছাকাছি থেকে প্রতিবেদন তৈরি করার সময় তারা এ হামলার স্বীকার হন।
আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ হাসপাতালে তার দুই সহকর্মীর মৃতদেহ আনার খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, "ইসমাইল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ও আহতদের কষ্ট এবং গাজার নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে [ইসরায়েলের] দখলদারিত্বের ফলে সংঘটিত গণহত্যার কথা জানাচ্ছিলেন।"
হামলার সময় ইসমাইল ও রামি দুজনই মিডিয়া ভেস্ট পরা ছিলেন এবং তাদের গাড়ি যে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিল— সেটাও চিহ্নিত করা ছিল।
হামলার শিকার হওয়ার ১৫ মিনিট আগে অফিসে থাকা সহকর্মীদের সঙ্গে তারা ফোনে যোগাযোগ করেন এবং কাছেই একটি বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে তারা জানান। আহত হওয়ার পর আল-আহলি আরব হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজনই মারা যান।
হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। গাজায় ১০ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে সাংবাদিকদের ওপর চালানো আগের হামলার ঘটনাও অস্বীকার করেছে দেশটি।
আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক চালানো 'পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেছে। একইসঙ্গে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের 'বিচারের আওতায় আনতে সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া' হবে বলে জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এর তথ্য অনুযায়ী, গাজায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক হামলায় ১১১ জন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের সংখ্যা ১৬৫।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় এখন পর্যন্ত আল জাজিরার চারজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে সাংবাদিক সামের আবুদাকা খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন এবং আল জাজিরার গাজা ব্যুরো প্রধান ওয়ায়েল দাহদুহ একই হামলায় আহত হন।
এই বছরের জানুয়ারিতে দাহদুহের ছেলে হামজা, যিনি নিজেও আল জাজিরার সাংবাদিকও ছিলেন তিনি খান ইউনিসে আরেকটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন।