নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় ডলার বন্ড ও শেয়ারের দাম কমেছে
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বামপন্থি রাজনীতিবিদ অনুরা কুমারা দিসানায়েক। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথে দেশটির ডলার বন্ড ও শেয়ারের মূল্য কমেছে। সেই সাথে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে করা বেইলআউট ও ঋণ চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সাধারণ অর্থে বেইলআউট বলতে বোঝায়, যখন কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার পথে থাকে, তখন শর্তসাপেক্ষে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
ব্যয় সংকোচন ও কর বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপের কারণে এই বেইলআউট চুক্তি শ্রীলংকার ভোটারদের কাছে অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই বামপন্থি দিসানায়েকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি আইএমএফের সাথে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করবেন।
২০২৯ সালের মার্চে মেয়াদ শেষ হওয়া বন্ডের মূল্য সোমবার ৩ দশমিক ১ সেন্ট কমে ৫০ দশমিক ২ সেন্টে নেমে এসেছে, যা প্রায় দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন। শ্রীলঙ্কার শীর্ষস্থানীয় ২০টি কোম্পানির শেয়ার মূল্য ২ শতাংশ কমেছে। তবে রুপির মান স্থিতিশীল ছিল।
রোববার টেলিমার কৌশলবিদ হাসনাইন মালিক এবং প্যাট্রিক কারান এক বার্তায় বলেন, "দিসানায়েকের বিজয় শ্রীলঙ্কার বন্ডের জন্য সবচেয়ে খারাপ ফলাফল বয়ে আনতে পারে"।
শ্রীলঙ্কার ২০২৯ সালের ডলার বন্ড এই প্রান্তিকে প্রায় ১৫ শতাংশ কমতে চলেছে। গত বছর এই বন্ডগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রায় ৭০ শতাংশ লাভ দিয়েছিল। গত বছরের সফলতার পরও এখন বন্ডগুলোর মূল্য অনেক কমে যাচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
দিসানায়েকের নতুন সরকার আইএমএফ চুক্তি ও ঋণদাতাদের সাথে করা পূর্ববর্তী চুক্তি মেনে চলবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তিনি ঋণদাতাদের আবার আলোচনায় বসতে বাধ্য করতে পারেন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা প্রায় ১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বন্ডহোল্ডারদের সাথে একটি নীতিগত চুক্তিতে পৌঁছায়। তবে দিসানায়েকের ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার জোটের কিছু সদস্য এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
জন কিলস স্টক ব্রোকার্সের গবেষণা প্রধান নবীন রতনায়েকে বলেন, বাজারের অবস্থা নতুন সরকারের অর্থনীতি ও ঋণ আলোচনা সম্পর্কিত পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে। তিনি আরও জানান, শেয়ারের মূল্য ইতিমধ্যে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রতিফলিত করেছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন