এশিয়ার দুই দেশ এখনো বিশ্বকাপে টিকে আছে, আজই তাদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাবে!
আজ নকআউট পর্বের দুই ম্যাচে মাঠে নামবে এশিয়ার দু'টি দেশ। বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলবে জাপান এবং রাত একটায় ব্রাজিলের বিপক্ষে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া।
ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই সেখানে লাতিন আমেরিকা অথবা ইউরোপের কোনো দলের রাজত্ব। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ-এর দীর্ঘ ৯২ বছরের ইতিহাসে এই দুই অঞ্চলের বাইরের কোনো দল কখনই শিরোপা জিততে পারেনি। আফ্রিকা বা এশিয়া অঞ্চলের দলগুলো সম্ভাবনা জাগালেও বেশি পথ পাড়ি দিতে পারেনি। কখনও ফাইনালেও খেলতে পারেনি এই দুই অঞ্চলের কোনো দেশ।
ব্যতিক্রম নয় কাতার বিশ্বকাপ। এ আসরেও শিরোপার দাবিদার হিসেবে যে কয় দলকে বিবেচনা করা হচ্ছে, তার প্রতিটি দলই লাতিন অথবা ইউরোপের। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স বা স্পেন; সবগুলো দলই এই দুই অঞ্চলের। এশিয়া বা আফ্রিকার কোনো দেশই নেই গোনার তালিকায়। এই দুই অঞ্চলের কোনো দেশ যে কখনও সেমি-ফাইনালের গন্ডিই পেরোতে পারেনি!
এশিয়ার সর্বোচ্চ সাফল্য শেষ চারে খেলা, ২০০২ সালে ঘরের মাঠে সেমি-ফাইনাল খেলেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে মধ্যপ্রাচ্যে আয়োজিত এই আসরে এশিয়ার কয়েকটি দল অভাবনীয় পারফরম্যান্স করেছে। এশিয়ার দেশগুলো তাদের উন্নতির ছাপ রেখেছে মাঠে।
এবার এশিয়া মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলে মূল পর্বের টিকেট পায় ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও জাপান। আর আয়োজক হিসেবে সুযোগ পায় কাতার।
নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়েও গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়ে যায় কাতার, ইরান ও সৌদি আরব। তবে নকআউট পর্বে পৌঁছে যায় বাকি দুটো দেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
ফুটবলের ইউরোপীয় পরাশক্তি জার্মানি এবং স্পেইনকে হারিয়ে গ্রুপপর্ব টপকায় জাপান। এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক রেকর্ড বয়ে এনেছে এই সামুরাই ব্লু দল। ফিফার ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, জাপান হলো প্রথম এশীয় দল যারা পর পর দু'বার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উন্নীত হয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ২৮ নম্বরে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া।
কোরিয়ার জন্য বাঁচামরার লড়াই ছিল এটি। ম্যাচের ৯১ মিনিট পর্যন্ত সমতা বজায় ছিল। সেই মুহূর্তে কোরিয়ানদের ভাগ্য পাল্টে দেন টোটেনহাম সুপারস্টার সং হিউং মিন। নিজেদের ডি বক্সের সামনে থেকে একা বল নিয়ে ছুটে যান প্রতিপক্ষের ডি বক্সের দিকে। সেখান থেকে নাটমেগ করে বল পাস দেন সতীর্থ হোওয়াং হি চানকে।
হি চানের গোলেই জয় নিশ্চিত হয় কোরিয়ার। কিন্তু জয়ের পরও উদ্যাপন করার কোনো সুযোগ ছিল না কোরিয়ার। কারণ উরুগুয়ে-ঘানার ম্যাচ তখনো শেষ হয়নি। উরুগুয়ে দুটি গোল দিলেই বাদ পড়ে যেতে তারা। তবে উরুগুয়ে সেটি পারেনি বলে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেয় দক্ষিণ কোরিয়া।
আজ রাত নয়টা বাজলেই শুরু হবে জাপান-ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ। আর একটায় হট ফেভারিট ব্রাজিলের বিপক্ষে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া।
এই দুই এশীয় দেশ কি পারবে কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি পৌঁছাতে? নাকি নকআউটেই শেষ হয়ে যাবে এশিয়ার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জেতার স্বপ্ন? উত্তর পাওয়া যাবে আজ রাতের মধ্যেই।