রপ্তানি ও উৎপাদন বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল
দেশের রপ্তানি ও উৎপাদনমুখী শিল্পখাতের উৎপাদন বাড়াতে গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সবুজ/পরিবেশবান্ধব রপ্তানি এবং উৎপাদনমুখি প্রতিষ্ঠানগুলোর মুলধনী যন্ত্রাদি ও যন্ত্রাংশের আমদানিমূল্য পরিশোধ অথবা স্থানীয়ভাবে উৎপাদি যন্ত্রাদি ও যন্ত্রাংশ কেনার জন্য এ খাত থেকে টার্ম লোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড থেকে এই তহবিল গঠন করা হয়। সকল তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। এ তহবিলের মেয়াদ নির্ধারণ করেছে ৫-১০ বছর।
গ্রাহক ঋণের সুদ হার হবে সর্বোচ্চ ৫%। তবে ব্যাংকগুলো ১% হারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তহবিল গঠন করতে পারবে। এরজন্য আগ্রহী ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে পার্টিসিপেশন অ্যাগ্রিমেন্ট করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, "২০১৬ সালে ২০০ মিলিয়ন ডলারের গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড গঠন করা হয়। এরপর ২০২০ সালে ২০০ ইউরোর ফান্ড করা হয়েছে। বর্তমানে লন্ডন ইন্টার-ব্যাংক অফার্ড রেট বাড়তি থাকায় দেশিয় টাকায় ফান্ড গঠন করা হয়েছে।"
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন উদ্যোগের ফলে দেশের উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, একইসঙ্গে শিল্পখাতের রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে একইসঙ্গে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে।
সার্কুলারে বলা হয়, গ্রাহক মোট আমদানিকৃত এলসির বিপরীতে ৭০% ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। বাকি ৩০% নিজ থেকে পরিশোধ করতে হবে। একক ঋণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে ২০০ কোটি টাকার অধিক ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না।
এছাড়া একক গ্রাহক বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ঋণ ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ অনুসরণ করতে হবে। সেই আইন অনুযায়ী কোন ব্যাংক তার মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫% এর বেশি ঋণ দিতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রে জানা পাওয়া যায়, কোভিডকালীন ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টেরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিট্যাল হিসেবে ১ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ গ্রহণ করা হয়। সেই প্যাকেজের গ্রাহক পর্যায়ে ৪.৫০% সুদে ঋণ দেওয়া হয়।
প্যাকেজের প্রথম মেয়াদে ২০২০ এর ৪মে থেকে ২০২১ এর ৩০ জুন পর্যন্ত ৩২ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। বর্তমানে চলমান তৃতীয় মেয়াদে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। যা এখন পর্যন্ত মোট ৪৫,৫২৮ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, কোন খেলাপি গ্রাহক এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধা পাবে না। এছাড়া কোন গ্রাহকের দুটি এক্সপোর্ট বিল সম্পূর্ণ বা আংশিক অপ্রত্যাবাসিত থাকলে এ তহবিলের সুবিধা পাবে না।
সকল সরকারি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তহবিল সুবিধা নিতে পারবে। তবে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর তহবিল সুবিধা পেতে খেলাপি ঋণের হার হবে ১০% এর কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে তিন মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধযোগ্য কিস্তি সুদ/মুনাফা সহ সংগ্রহ করবে। তবে কোন ব্যাংক যথাসময়ে দিতে না পারলে তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হবে। তবে কোনো ঋণ যথাযথ ব্যবহার না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ৩% সুদ/মুনাফাসহ এককালীন কেটে নেওয়া হবে।