মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা যথারীতি চলবে: রাবি উপাচার্য
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা যথারীতি চলবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান উপাচার্য।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ৭দফা দাবির মধ্যে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস প্রবেশে কড়াকড়ি, ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেস মালিক ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক করা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা এবং শতভাগ আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করবে।
উপাচার্য বলেন, "শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই জনের চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হতে পারে।"
এছাড়া, সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে ২৫০ থেকে ৩০০ জন বিক্ষুব্ধ জনতাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে মতিহার থানা পুলিশ। রোববার (১২ মার্চ) রাতে মতিহার থানার এসআই আমানতউল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান। মামলা দায়েরের পাশাপাশি এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকায়। সীমিত রয়েছে যান চলাচল। এখনও বন্ধ বিনোদপুর বাজারের দোকানপাট।
জানান যায়, তদন্ত শুরুর পাশাপাশি উদ্ভূদ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ক্যাম্পাস এলাকায় মোতায়েন হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।
এদিকে, পুলিশের মামলার বিষয়ে রাবি উপাচার্য জানান, শিক্ষার্থীদের যেন হয়রানি করা না হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুরুত্ব দেবে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের অগ্নিসংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "বহিরাগতদের ইন্ধনে এ সংঘর্ষ সংঘটিত হয়েছে। বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব কাজ করতে পারেনা।"
এদিকে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। রোববার রাত থেকে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল শুরু হয়। যান চলাচল যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য বিনোদপুর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) বগুড়া থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসা এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় বাসের সুপারভাইজারের; সেই সূত্র ধরেই মূল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের হামলা-সংঘর্ষ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে এখনো ১৮ জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ছয়জন শিক্ষার্থীর চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।