মুদ্রানীতি: মিশন মূল্যস্ফীতি
মূল্যস্ফীতি যখন দেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিপত্তি হয়ে উঠেছে, তখন মুদ্রানীতি কাঠামোয় পরিবর্তন এনে সুদহারের সীমা উঠিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে, মুল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বা রেপো রেট বাড়ানোর মাধ্যমে ঋণ গ্রহণকে আরও ব্যয়বহুল করছে।
আজ রোববার (১৮ জুন) আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতির ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহকে আঁটসাঁট করা হয়, এবং আগামী অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৪.১ শতাংশ।
নীতি সুদহার করিডর; বাজার-ভিত্তিক সুদহার রেফারেন্স রেট চালু; মুদ্রার একক বিনিময় হার; লেনদেনের ভারসাম্য ও আইএমএফ নির্দেশিত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুযায়ী মোট রিজার্ভের হিসাব করাসহ – নতুন মুদ্রানীতি কাঠামোয় চারটি মৌলিক সংস্কার বা পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে সরকারের নির্ধারিত ৬ শতাংশের মধ্যেই রাখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে চলমান মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতিকে ৭.৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা মে মাসে উল্লম্ফন করে প্রায় ১০ শতাংশ হয়ে যায়।
ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা মুদ্রানীতির কাঠামোতে পরিবর্তন এনেছি, কারণ আগের টাকা সরবরাহ-ভিত্তিক নীতির আওতায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি।"
তিনি বলেন, আমদানিতে বিধিনিষেধ দেওয়া সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি হয়েছে, এতেই প্রমাণ হয়, ঋণের সুদহার সীমার কারণে টাকা সস্তাই ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে, সীমা তুলে নিয়ে সুদহার টার্গেট-ভিত্তিক মুদ্রানীতি নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গভর্নর বলেন, সুদহারে সীমা আরোপ ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সীমা তুলে নেওয়াটাও একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সীমা ভালো কিছু নয়।
নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে বাজার-ভিত্তিক একটি রেফারেন্স রেট চালু করেছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে সুদহারে যে সীমা আরোপ করা হয়েছিল, তার পরিবর্তে এটি চালু হবে।
মুদ্রানীতির বিবৃতিতে বলা হয়, "এর লক্ষ্য ব্যাংকিং খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি-পর্যায়ের ঋণের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি।"
ঋণের রেফারেন্স রেট, সংক্ষেপে স্মার্ট (বা সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব টেজারি বিল) বলেও পরিচিত। কার্যকর হওয়ার পর প্রতিমাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এ সুদহার ঘোষণা করা হবে। এতে ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য রিস্ক প্রিমিয়াম বা মার্জিন রেখে এটা নির্ধারিত হবে। কার্যত, স্মার্ট-সহ সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ মার্জিন প্রযোজ্য হবে ব্যাংকের ক্ষেত্রে। এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্মার্ট-সহ তা হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ।
তবে সিএমএসএমই (কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ) এবং গ্রাহক ঋণের ক্ষেত্রে – অতিরিক্ত ফি-সহ সর্বোচ্চ ১ শতাংশ সুপারভিশন খরচ নেওয়া যাবে। তবে ক্রেডিট কার্ডের ঋণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সুদহারের কোনো পরিবর্তন হবে না। আগামী ১ জুলাই থেকে ঋণের সুদহারের এই নতুন ফর্মুলা কার্যকর হবে।
বর্তমানে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের সুদহার হচ্ছে ৭.১ শতাংশ। নতুন ফর্মুলা অনুসারে, ব্যাংকের জন্য যা হবে সর্বোচ্চ ১০.১ শতাংশ এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ১২.১ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ঋণের সুদহার এখনও বেশ নিয়ন্ত্রিত, তাই নতুন ফর্মুলা মূল্যস্ফীতি কমাতে সহায়ক হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও ট্রেজারি বিলের রেট নির্ধারণ করছে। সর্বোচ্চ সীমা আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহারকেও নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। তাই যতক্ষণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারকে সুদহার নির্ধারণ করতে না দেবে – ততোক্ষণ মূল্যস্ফীতিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান- সানেম এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, যে পলিসি ইন্টারেস্ট রেট করিডরের কথা বলা হচ্ছে, এটা এখনো নিশ্চিত করছে না যে সুদের হার আসলেই বাজার-ভিত্তিক হবে কিনা। কারণ ট্রেজারি বিলের নিলামে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সেভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে না, এভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর সুদহার নিম্নমুখী রেখেছে কিনা– সে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
আটসাঁট ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অবস্থান প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বা রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নীতি সুদহার বা রেপো রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ কার্যকর করা হবে। রিভার্স রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে হবে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। রেপো রেট ২০০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারবে এবং সর্বোচ্চ ৮.৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারবে।
এই কাঠামোর অধীনে আন্তঃব্যাংক কলমানি রেট নীতি সুদহারের সাথে অনেকটাই সমান্তরাল অবস্থানে থাকবে, এভাবে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে।
"এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঋণের খরচ বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, আশা করা হচ্ছে এর প্রভাব পড়বে ভোক্তা মূল্য সূচকে" বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক একক মুদ্রা বিনিময় হার গ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে মার্কিন ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার সাথে টাকার বিনিময় মান নির্ধারণের ক্ষমতা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। "বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় বা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর নির্দিষ্ট দর নির্ধারণ করবে না, এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে।"
"সর্বোপরি বাংলাদেশ ব্যাংক মোট বৈদেশিক সম্পদের হিসাব ও রিপোর্টের বর্তমান পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট পদ্ধতির ষষ্ঠ সংস্করণ বা বিপিএম৬ অনুসারে, মোট বা গ্রস বৈদেশিক রিজার্ভের (জিআইর) হিসাব ও গণনা করবে।"
৭ জুন পর্যন্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ২৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফ নির্দেশিত পদ্ধতিতে এর কিছু অংশ বা প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারকে হিসাব থেকে বাদ রাখতে হবে।
বিপিএম৬ অনুসারে, বৈদেশিক মুদ্রায় দেওয়া রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) ঋণ, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ডিপোজিট, আইডিবি গ্রুপে ডিপোজিট, বিনিয়োগ গ্রেডের নিচে থাকা ফিক্সড-ইনকাম সিকিউরিটিজ, শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া একটি ঋণ এবং রুপান্তরযোগ্য নয় অন্যান্য এমন মুদ্রায় রাখা বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদকে বাদ দিয়েই গ্রস রিজার্ভের হিসাব করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
এছাড়া, গ্রস রিজার্ভ থেকে দায় বাদ রেখেই নেট রিজার্ভের হিসাবও করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায় রয়েছে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার।
নতুন পদ্ধতি অনুসারে হিসাব করলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ দাঁড়ায় ২০ বিলিয়ন ডলার।
জুন নাগাদ রিজার্ভ ২৪.৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সীমা বেঁধে দেয় আইএমএফ। এই মাসেই ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পারফরম্যান্সের প্রথম মূল্যায়ন করবে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাটি।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নেট রিজার্ভ প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, আইএমএফ নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত রিজার্ভ বাড়াতে না পারাটা তেমন উদ্বেগের কিছু নয়।
আইএমএফের শর্তপূরণে, শুধু রিজার্ভ বৃদ্ধির চেয়ে অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি রক্ষাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নেট রিজার্ভ লক্ষ্য অর্জন না করতে পারলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফকে বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আব্দুর রউফ তালুকদার।
তবে আগামী অর্থবছরে নেট রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা করা বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এক নম্বর কালপ্রিট- মূল্যস্ফীতি
জানুয়ারি মাসে চলমান (বিদায়ী) মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সময় বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ও পণ্যমূল্যের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পুরোদমে পড়েছিল। তখন মূল্যস্ফীতি হু-হু করে বাড়ছিল, এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বাজার দ্রুত অস্থিতিশীল হয়ে উঠছিল।
কিন্তু ওই সময়েও সামষ্টিক অর্থনীতির অনেক নির্দেশক এখনকার তুলনায় শক্তিশালী ছিল — বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বড় ছিল, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিও উচ্চ ছিল।
ছয় মাস পর পরিস্থিতি এখন অধিকতর খারাপের দিকে। রোববার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতিতে এখনো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাকেই 'প্রথম ও প্রধান' উদ্দেশ্য হিসেবেই অভিহিত করা হয়েছে।
'ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং বিনিময় হারের চলমান চাপ দেশের অর্থনীতির জন্য এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ,' বলা হয় মুদ্রানীতিতে। এছাড়া এটিতে খেলাপি ঋণ ও ক্ষয়িষ্ণু রিজার্ভকে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দুই অঙ্কের দিকে ধাবমান মূল্যস্ফীতি সামলানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এর কৌশল হবে 'অর্থনীতিতে সামষ্টিক চাহিদা কমানো এবং একইসঙ্গে সরবরাহ সাইড ঠিক রাখা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর নতুন মুদ্রানীতি বিবৃতি (এমপিএস) অনুযায়ী, স্থিতিশীল ও অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি উদ্যোগের সহযোগে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করবে।
বর্তমান মুদ্রানীতি কেন মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধি থামাতে সহায়তা করেনি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর মধ্যে রয়েছে – আমদানি করা পণ্যের বৈশ্বিক বাজারে উচ্চমূল্য ও টাকার বড় অবমূল্যায়ন। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে, জ্বালানি ও বিদ্যুতের দামের ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয়। ফলে অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্যের দাম ও মূল্যস্ফীতি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়ে গেছে বলে জানানো হয়।
প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের অভাব, সেই সঙ্গে বাজার সিন্ডিকেটও বর্তমান ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব রাখতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া এটি আরও জানিয়েছে, খাদ্য (ফুড) মূল্যস্ফীতির তুলনায় খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, বৈশ্বিক প্রভাবকগুলোয় উন্নতি হলে — যেমন যদি বড় অর্থনীতিগুলো সুদহার বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা বন্ধ করে, যদি আর কোনো মহামারি না দেখা দেয় এবং যুদ্ধসংশ্লিষ্ট অস্থিতিশীলতা স্বাভাবিক হয় — তাহলে নতুন মুদ্রানীতিতে নেওয়া নীতিমালাগুলো অভীষ্ট লক্ষ্যে কাজ করবে।
'এ দিকগুলো ক্রমে অনুকূলে এলে, বাংলাদেশ ব্যাংক স্থিতিশীল ও সহনশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হারের চাপ সামলানোর লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে,' মুদ্রানীতিতে বলা হয়।
'মুডিস-এর রেটিং কমানোর কারণ ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নয়'
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডিস কর্তৃক দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাম্প্রতিক অবনমন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য খুব বেশি গুরুত্ব রাখে না।
তিনি বলেন, 'মুডিস আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর যে রেটিং করেছে, এটা মনে হচ্ছে ভূরাজনৈতিকভাবে হয়েছে, এটা পিউর অর্থনৈতিক রিপোটিং নয়।'
রোববার মুদ্রানীতি ঘোষণার অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'মুডিস ২০১২ সালে আমাদের যে রেটিং রেখেছে, তখন আমাদের রিজার্ভ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। এর পরে আমাদের অর্থনীতি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে, আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে, কিন্তু মুডিস আমাদের রেটিংয়ে পরিবর্তন আনেনি।'
এর আগে গত ৩১ মে স্থানীয় ৬টি ব্যাংক—ব্র্যাক ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক ও দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং কমিয়ে দেয় মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস।