‘৪০ বছর অপেক্ষা করছি, আর না…’ ইইউতে যোগ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রোববার বলেছেন, তারা আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হওয়ার আশা করেন না। কারণ ব্লকটি তুরস্ককে চার দশক ধরে স্রেফ অপেক্ষায়ই রেখেছে।
এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক 'ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে আর কিছু আশা করে না, তারা আমাদেরকে ৪০ বছর ধরে তাদের দরজার সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।'
পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অধিবেশনের আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমরা ইইউকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি রেখেছি, কিন্তু তারা তাদের প্রায় কোনো প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করেনি।'
এরদোয়ান আরও বলেন, ইইউতে তার দেশের যোগ দেওয়ার জন্য 'প্রবেশ প্রক্রিয়ার নতুন কোনো দাবি বা শর্ত সহ্য করবেন' না।
বৃহস্পতিবার ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের (ইসিএইচআর) দেওয়া একটি রায়ও এরদোয়ানের এই ক্ষোভের কারণ। ২০১৬ সালে অভ্যুত্থানচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে একজন শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করায় তুরস্কের নিন্দা করেছে ইসিএইচআর। ওই শিক্ষক অভিযুক্ত চক্রান্তকারীদের সঙ্গে যুক্ত একটি মেসেজিং অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন।
এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্যর্থ চেষ্টার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রচারক ফেথুল্লাহ গুলেনের নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী রয়েছে বলে দাবি করছে তুরস্ক। দেশটির অভিযোগ, পরিকল্পনাটি সমন্বয়ে বাইলক নামে একটি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল।
রোববার এরদোয়ান ইসিএইচআরের সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার চেষ্টা করছে তুরস্ক। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তুরস্কের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে ব্লকটি।
তবে ইইউর সদস্যপদ দেওয়ার প্রক্রিয়াটিও একটু জটিল বলে জানানো হয়েছে ডয়চে ভেলে বাংলার এক প্রতিবেদনে।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইইউর সব সদস্যের সমর্থন, অর্থাৎ ঐকমত্য প্রয়োজন। এছাড়া অভিবাসন ও আশ্রয়ের শর্তাবলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেও ১৫টি সদস্যদেশের সমর্থন প্রয়োজন।
এই পরিস্থিতিএ ইইউর সদস্য যত বেশি হবে, ভেটো প্রয়োগের কারণে কোনো সিদ্ধান্ত আটকে যাওয়ার ঝুঁকি তত বেশি হবে বলে জানানো হয় ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে। অন্যদিকে ইইউর সদস্য হতে যেসব দেশ আবেদন করেছে, তাদের বেশিরভাগেরই জিডিপি বর্তমানে ইইউর সবচেয়ে দরিদ্র সদস্যদেশ বুলগেরিয়ার চেয়েও কম।
এরকম নানামুখী কারণে ইইউর সদস্য বাড়ানো নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তবে এসব জটিলতা সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ তার পরিধি বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত হতে পারে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেল।