সবার ব্যাটেই রান, বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ
পুরো বিশ্বকাপে দিশাহারা থাকা বাংলাদেশ যেন অবশেষে ঠিক পথ খুঁজে পেল। ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকা দলটির প্রায় সব ব্যাটসম্যানই আজ রানের দেখা পেলেন। ১০ জন ব্যাটিং করা বাংলাদেশের সাতজন ব্যাটসম্যানই ২০ এর বেশি রান করেছেন; একজন পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। অথচ কোনো ম্যাচে কেউ-ই ৫০ ছাড়াতে পারেননি, কিছু ম্যাচে কেবল তিন-চারজন করেছেন দুই অঙ্কের রান।
বিশ্বকাপে নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ৩০৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এবারের আসরে প্রথমবারের মতো তিন'শর বেশি রান করলো তারা। দুজন রান আউটে কাটা না পড়লে সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারতো।
এবারের বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। বিশ্ব আসরে অজিদের বিপক্ষে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ, আগে ব্যাটিং করার হিসেবে সর্বোচ্চ। এই রান পাড়ি দিয়ে জিততে হলে বিশ্বকাপে নিজেদের রেকর্ড বদলাতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া ২৯২, শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ভালোই শুরু করে। উদ্বোধনী জুটিতে ১১.২ ওভারে ৭৬ রান যোগ করেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন কুমার দাস। পুরো আসরে অনুজ্জ্বল থেকে যাওয়া তরুণ বাঁহাতি ওপেনার সাবলীল ব্যাটিং-ই করছিলেন আজ। কিন্তু শন অ্যাবটের লাফিয়ে ওঠা বলে ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে বিদায় নেন ৩৪ বলে ৬টি চারে ৩৬ রান করা তানজিদ তামিম।
আর কিছুক্ষণ ব্যাটিং করা লিটনও ৩৬ রান করেন। ৪৫ বলে ইনিংসে ৫টি চার মারা ডানহাতি এই ওপেনার অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে মার্নাস লাবুশেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন। এরপর জুটি গড়ে তোলেন সাকিব আল হাসানের অবর্তমানে নেতৃত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত ও ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি হওয়া তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন এ দুজন।
শান্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হলে এই জুটি ভাঙে। দুই রান নিতে গিয়ে লাফিয়েও পূর্ণ করতে পারেননি শান্ত। ৫৭ বলে ৬টি চারে ৪৫ রান করে আউট হন তিনি। তিন নম্বর উইকেট হারিয়েও অবশ্য চাপে পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। হৃদয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের ইনিংসটি আরও বড় হতে পারতো। কিন্তু তিনিও রান আউট হয়ে ফেরেন। ২৮ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। এবারের বিশ্বকাপে ৭ ইনিংসে একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিসহ ৫৫.৬৬ গড়ে ৩২৮ রান করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। অথচ বিশ্বকাপে তার জায়গা পাওয়া নিয়েই ছিল সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তা।
ভালো শুরু করেও মুশফিকুর রহিম বেশি পথ পাড়ি দিতে পারেননি। ২৪ বলে একটি ছক্কায় ২১ রান করেন অভিজ্ঞ ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৪৭তম ওভারে আউট হন বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান করা হৃদয়। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৭৯ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৪ রান করেন, বিশ্বকাপে এটাই তার প্রথম ও একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি।। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে ৩০০ ছাড়ায় বাংলাদেশ। ২০ বলে ৪টি চারে ২৯ রান করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জ্যাম্পা ২টি করে উইকেট নেন। একটি উইকেট পান মার্কাস স্টয়নিস।