তোশাখানা মামলায় ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীর ১৪ বছরের কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে রাষ্ট্রীয় উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
ইসলামাবাদের একটি দুর্নীতি বিরোধী আদালতের এই দণ্ডাদেশের একদিন আগেই ইমরানকে আরেকটি মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা প্রকাশের অভিযোগে। পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে এই রায় দেওয়া হলো।
২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় সময় রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকা ১৪০ মিলিয়ন রুপি বেশি মূল্যের উপহার বিক্রি করার জন্য ইমরানকে আগস্টে অন্য একটি আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।
পরে সাজা স্থগিত করা হলেও ইমরান অন্যান্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি বৈধভাবে জিনিসগুলো কিনেছিলেন।
সরকারি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ইমরানের সহযোগীরা দুবাইতে উপহার বিক্রি করেছে।
গত মাসে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) সৌদি যুবরাজের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি গহনা সেট নিজেদের অধীনে রাখার জন্য আদালতে ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে একটি নতুন রেফারেন্স দায়ের করেছিল যেখানে তাদের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়।
ইসলামাবাদের একটি আদালত এই মাসের শুরুর দিকে তাদের দুজনকেই এই রেফারেন্সে অভিযুক্ত করেছিলেন। দুর্নীতিবিরোধী ওয়াচডগ রেফারেন্স অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বপালনকালে ইমরান এবং তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিদেশি বিশিষ্টজনের কাছ থেকে মোট ১০৮ টি উপহার পেয়েছিলেন।
আজ দেওয়া রায় অনুসারে, ইমরান এবং বুশরাকে ৭৮৭ মিলিয়ন রুপি জরিমানা করা হয়েছে। শুনানির সময় ইমরান খানকে হাজির করা হলেও বুশরা বিবি আদালতে হাজির হননি।
বিচারক ইতোমধ্যেই প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের জেরা করার অধিকার বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং ইমরান ও তাঁর স্ত্রীকে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩৪২-এর (অভিযুক্তদের পরীক্ষা করার ক্ষমতা) অধীনে তাদের বক্তব্য রেকর্ড করতে বলেছিলেন।
বিচারক মোহাম্মদ বশির রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে এই শুনানি পরিচালনা করেন যেখানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বন্দী রয়েছেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, "পাকিস্তানে বিদ্যমান প্রতিটি আইনকে এই দুই দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। এই মামলার উচ্চ আদালতে বহাল থাকার কোনো ভিত্তি নেই। যেভাবে আইনের সম্পূর্ণ অবহেলা এবং উপহাস হচ্ছে সেটি লজ্জাজনক।"