নিজেদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন গাজার চিকিৎসকেরা
গাজার নাসের হাসপাতালের ফিলিস্তিনি চিকিৎসকেরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গত মাসে তাদের হাসপাতালে অভিযান চালানোর পর ইসরায়েলি সেনারা তাদের চোখ বেঁধে নিয়ে যায়, আটকে রেখে নির্যাতন করে, নগ্ন হতে বাধ্য করে এবং বারংবার মারধর করেছে।
নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ আবু সাবহা বলেন, তাকে এক সপ্তাহ আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে তার গায়ের ওপর কুকুর তুলে দেওয়া হয়েছিল এবং একজন ইসরায়েলি সেনা মেরে তার হাত ভেঙে দিয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও দুজন চিকিৎসকের সঙ্গে তার বিবরণের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।
তারা বিবিসিকে বলেছেন, তাদের চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে, শরীরে ঠান্ডা পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অস্বস্তিকর ভঙ্গিতে হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
তারা জানিয়েছে, কয়েকদিন আটকে রাখার পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিবিসি।
আইডিএফ এসব প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেয়নি, বা অভিযোগগুলো অস্বীকারও করেনি।
তবে তারা তাদের অভিযানের সময় চিকিৎসকদের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তারা বলেছে, 'আটকদের যে কোনো অপব্যবহার আইডিএফ আদেশের পরিপন্থি এবং কঠোরভাবে নিষিদ্ধ'।
আইডিএফ ১৫ ফেব্রুয়ারি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের এই হাসপাতালটিতে অভিযান চালায়।
তাদের দাবি, গোয়েন্দা তথ্য ছিল এই হাসপাতালে হামাস কর্মীদের রাখা হয়েছিল। তাই এখানে অভিযান চালানো হয়।
আইডিএফ আরও জানায়, ৭ অক্টোবর হামাস অপহরণ করে নেওয়া ইসরায়েলি জিম্মিদের সেখানে রাখা হয়েছিল।জিম্মিদের মধ্যে কয়েকজন প্রকাশ্যে বলেছে, তাদেরকে নাসের হাসপাতালে রাখা হয়েছিল।
তবে, হামাস বরাবরই হাসপাতালের ভেতরে তাদের যোদ্ধাদের তৎপরতা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চিকিৎসকদের আটক করার দিন, অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ বিবিসির সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি ভবনের সামনে সারি সারি পুরুষ তাদের অন্তর্বাস খুলে মাথার পেছনে হাত দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন। কয়েকজনের সামনে পড়ে আছে মেডিক্যালের পোশাক।
হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক ড. আতেফ আল-হাউত বিবিসিকে বলেন, 'যারা মাথা সামান্য নাড়িয়েছে বা নড়াচড়া করার চেষ্টা করেছে, তাদেরই মারধর করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা তাদের এই লজ্জাজনক অবস্থায় ফেলে রাখা হয়।'
আইডিএফ বিবিসিকে বলেছে, 'নিয়ম অনুযায়ী অভিযান চলাকালীন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের তাদের পোশাক এমনভাবে জমা দিতে হয়, যাতে তাদের পোশাক তল্লাশি করা যায় এবং তারা বিস্ফোরক ভেস্ট বা অন্যান্য অস্ত্র লুকিয়ে রাখছে না তা নিশ্চিত হওয়া যায়।'
তারা বলেন, 'আটকদের জামাকাপড় তাৎক্ষণিকভাবে ফেরত দেওয়া হয় না, কারণ তারা শত্রুতার উদ্দেশ্যে কোনো অস্ত্র গোপন করতে পারে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, বন্দিদের পোশাক ফেরত দেওয়া হয়।'
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাদের একটি হাসপাতালের ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তাদের মারধর করা হয়েছিল। তারপরে তাদের একটি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সব পোশাক খুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২৬ বছর বয়সী নাসেরে সদ্য যোগ দেওয়া চিকিৎসক ডা. আবু সাবহা বন্দি থাকাকালীন তার ওপর চালানো কয়েক ধরনের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন।
এরমধ্যে একটি হলো একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
তিনি বলেন, বন্দিদের অন্যান্য শাস্তির মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে উপুড় করে শুইয়ে রাখা এবং খাবার দিতে দেরি করা।
একজন মানবিক আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, ভিডিও ফুটেজ এবং বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়া চিকিৎসকদের সাক্ষ্য 'অত্যন্ত উদ্বেগজনক'।
তিনি বলেন, বিবিসির হাতে আসা এসব 'স্পষ্টভাবে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের পর্যায়ে চলে গেছে'।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ল'র সহ-পরিচালক ড. লরেন্স হিল-কাউথর্ন বলেন, 'সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে যে আইন মেনে চলা হয়েছে, এগুলো তার পরিপন্থি।'
তিনি বলেন, ' তাদের কোনোভাবেই শত্রু পক্ষের নাগরিকদের সুরক্ষা অধিকার ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।'
নাসেরে থেকে যাওয়া চিকিৎসকেরা বলছেন, হাসপাতালে আইডিএফের অভিযানের কারণে তারা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারতেন না।
মহাব্যবস্থাপক ডা. হাউট জানিয়েছেন, আইডিএফ যখন হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন সেখানে প্রায় ২০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। তাদের মধ্যে অনেকে 'শয্যাশায়ী' ছিলেন, এদের মধ্যে ছয়জন আইসিইউর ভিতরে ছিলেন, ।
হাসপাতালে থেকে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে স্থানান্তরিত করার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং গুরুতর অসুস্থ বিভিন্ন রোগীর সেবা দিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে। অথচ এসব রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো প্রশিক্ষণ তাদের নেই।'
একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনারা হাসপাতাল দখলের পর এখানকার ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তারা বলেন, নাসেরকে সচল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবসহ হাসপাতালের করুণ অবস্থার কারণেও অনেক রোগী মারা গেছেন।
আইডিএফ বিবিসিকে বলেছে, তারা 'হাসপাতালটিতে শত শত মানুষের খাদ্য রেশন এবং একটি বিকল্প জেনারেটর সরবরাহ করেছে, যাতে এটি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারে।'
আইডিএফের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে হাসপাতালের 'প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা'গুলো সচল ছিল বলে জানিয়েছে তারা।
১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও) বলেছিল, নাসের হাসপাতালে খাদ্য ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে এবং চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাকি রোগীদের গাজার আশেপাশের অন্যান্য হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং সেখানে কর্মরত চিকিৎসা কর্মীরা কিছুক্ষণ পরেই চলে যান।
'আমি ভেবেছিলাম আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে'
মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি ও অন্যান্য চিকিৎসকরা বিবিসিকে বলেছেন, মোবারক নামের ওই প্রসূতি ভবনে আইডিএফ জিজ্ঞাসাবাদ ও হাসপাতালের কর্মীদের মারধর করে।
ড. আবু সাবহা বলেন, অভিযানের পর প্রাথমিকভাবে তাকে রোগীদের সঙ্গে রেখে যাওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু পরে তাকেও মোবারকে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি বলেন, 'তারা আমাকে একটি চেয়ারে বসিয়েছিল এবং এটি ফাঁসির মঞ্চের মতো ছিল। আমি দড়ির টাঙানোর শব্দ শুনেছিলাম, তাই আমি ভেবেছিলাম আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'এরপর তারা একটি বোতল ভাঙে এবং তা (গ্লাস) দিয়ে আমার পা কেটে ফেলে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। এরপর তারা একের পর এক ডাক্তারকে ডেকে এনে পাশাপাশি বসায়। আমি তাদের নাম ও কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছিলাম।
আইডিএফ এ ধরনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বিবিসিকে বলেছে, তারা 'বন্দিদের নকল মৃত্যুদণ্ড দেয় না'।
বিবিসির সঙ্গে কথা বলা ওই তিন বন্দির সবাই বলেছেন, সামরিক যানে গাদাগাদি করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এবং মারধর করা হয়। সৈন্যরা তাদের লাঠি, পায়ের জুতা, রাইফেলের বাট দিয়ে খোঁচা দিয়েছেএবং ঘুষি মেরেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, 'আমরা সবাই নগ্ন ছিলাম। শুধু বক্সার পরা। তারা আমাদের সবাইকে গাদাগাদি করে রেখেছিল। এভাবে তারা আমাদের গাজার বাইরে নিয়ে যায়।'
তিনি বলেন, 'পুরো রাস্তা জুড়ে আমাদের মারা হচ্ছিল, গালিগালাজ করা হচ্ছিল এবং অপমান করা হচ্ছিল। এছাড়া তারা আমাদের গায়ে ঠান্ডা পানি ঢেলে দিচ্ছিল।'
ডা. আবু সাবহা বলেন, যাত্রার সময় সৈন্যরা বন্দিদের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। তারা আমাদের মাটির ওপর নুড়ি বেছানো একটি স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের হাঁটু গেড়ে বসায় বাধ্য করে এবং আমাদের চোখ বেঁধে দেয়। সেখানে অনেকগুলো গর্ত ছিল, তাই আমরা ভেবেছিলাম তারা আমাদের হত্যা করবে এবং এখানে আমাদের কবর দেবে। আমরা সবাই নামাজ পড়া শুরু করলাম।
তিনি জানান, এরপর তাকে একটি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা অন্য বন্দিদের রাখা হয়।
মুক্তি পাওয়া অপর দুই বন্দি জানান, মারধরের ফলে তারা আহত হওয়ায় তাদের মেডিক্যাল চেকআপ করানো হলেও কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি।
একজন বলেন, আঘাতের জন্য চিকিৎসা করার পরিবর্তে, একজন আইডিএফ সৈন্য তাকে আঘাত পাওয়া জায়গায় ফের আঘাত করে।
ড. আবু সাবহা বিবিসিকে বলেন, নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে নিয়মিতভাবে বন্দিদের শাস্তি দেওয়া হতো। একবার আমার চোখের বাঁধন কিছুটা নিচে নেমে যায়, তবে হাত পেছনে মুড়িয়ে হাতকড়া পরানো থাকায় আমি তা ঠিক করতে পারিনি।
তিনি বলেন, 'এই অপরাধের শাস্তি দিতে তারা আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়েছিল ... আমি মাথার উপরে হাত তুলে তিন ঘণ্টা নিচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর তিনি (একজন সৈনিক) আমাকে তার কাছে যেতে বললেন। আমি তার কাছে যাওয়ার পর আমার হাত ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত সে আমায় মারল।
তিনি জানান, সেদিন তাকে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে মারা হয় এবং তার গায়ের ওপর কুকুর তুলে দেওয়া হয়।
বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে, ডা. আবু সাবহার হাতের এক্সরে করা হয়েছিল এবং তাকে বন্দি করার পরে গাজার একটি ফিল্ড হাসপাতালে হাত ভাঙার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
তারা বলেন, ৭ অক্টোবর হামাসের বন্দুকধারীরা গাজা থেকে ইসরায়েলে ঢুকে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করা এবং ২৫৩ জনকে জিম্মি করার সময় তারা কোথায় ছিলেন সে সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
এখনো ১৩০ জনেরও বেশি জিম্মি হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ৩১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
মুক্তি পাওয়া এক বন্দি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের দু'দিন পর এক আইডিএফ কর্মকর্তা তাকে বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই এবং তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, 'কোনো কিছুতে জড়িত না থেকেও আমি যে মারধর ও অপমানের শিকার হলাম, যা তুমি আমার সাথে করেছ, তার জন্য আমাকে কে ক্ষতিপূরণ দেবে? '
সে বলল, 'আমি তোমার সাথে কোনো কিছু করিনি।'
তবে, ড. আবু সাবহা বিবিসিকে বলেছেন, আট দিন বন্দি থাকার সময় তাকে কখনো কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
বিবিসি যে তিনজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছে, তারা সবাই বলেছেন, মুক্তির পর তাদের চোখ বেঁধে গাজায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিবিসি ড. আবু সাবহার বয়ান নিশ্চিত করেছে যে, তিনি ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে গাজায় ফিরে এসেছিলেন। এর অবস্থান গাজা উপত্যকার দক্ষিণতম বিন্দুর কাছে, যেখানে গাজা, ইসরায়েল ও মিশরের বর্ডার।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বলেছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল তাদের কোনো ফিলিস্তিনি বন্দির সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি।
তারা বিবিসিকে বলেছে, চিকিৎসকদের গ্রেপ্তার ও চলমান আটকের খবরে তারা 'গভীরভাবে উদ্বিগ্ন'।
তারা আরও বলেছে, 'তারা যেখানেই থাকুক না কেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে বন্দিদের সঙ্গে সর্বদা মানবিক ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা উচিত।'