বান্দরবানে ‘১০০ একর জমির মালিক’ বেনজীর
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পত্তি নিয়ে যখন সারাদেশে আলোচনা তুঙ্গে, সেই মুহূর্তেই বেরিয়ে এল পাহাড়ে তার সম্পত্তির খোঁজ। অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আছে বেনজীরের বিপুল সম্পত্তি।
স্থানীয়রা জানান, বান্দরবানে প্রায় একশ একর জমির মালিক বেনজীর। ওই জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন মৎস্য ও গরুর খামার। এছাড়া রয়েছে ফলের বাগান আর আলিশান বাংলোও।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি। দুদকের অনুসন্ধানে একের পর এক বেরিয়ে এসেছে তার অবৈধ সম্পত্তির খোঁজ। সম্প্রতি আদালত বেনজীরের অবৈধ সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিলে সারাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তিনি।
সুয়ালক ইউনিয়নে জমি দখলের অভিযোগ
বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর জমি জমি বেনজিরের দখলে আছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, চা বোর্ড অফিসসংলগ্ন এই জমিটি বেনজির, তার স্ত্রী ও তার মেয়ের নামে দখলে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশপ্রধান থাকাকালে ২৫ একর জায়গা লিজ নেওয়ার পর ওই এলাকার আশেপাশের জায়গাও দখলে নিয়ে নেন বেনজীর। ওই জায়গায় গড়ে তুলেছেন একটি মৎস্য ও গরুর খামার। সেখানে রয়েছে বিশাল ফলের বাগান ও একটি দোতলা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাংলো। বাগানবাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি ব্যক্তিগত রাস্তাও করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দোহাজারীর লেদু সদাগরের নামে থাকা ২৫ একর লিজের জমিও দখল করে নেন বেনজীর। লেদু সদাগরের ছেলে মো. লোকমান বলেন, তার বাবার নামে রাবার প্ল্যান্টেশনের ২৫ একর জায়গা বেনজীর দখল করে নেওয়ার পর সেগুলোর আর খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
এছাড়া স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ইলিয়াস চৌধুরীর দাবি, লিজের জমির পাশের প্রায় আধা একর জমিও দখল করেছেন বেনজীর।
বান্দরবান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মং ওয়াইচিং মারমা বেনজীরের জায়গাগুলো দেখাশোনা করছেন বলে জানা গেছে। ২০১৬ সালে করা জায়গার কাগজপত্রে দেখা গেছে, বেনজীর ও তার পরিবারের সঙ্গে আমমোক্তারনামায়ও মং ওয়াইচিং মারমার নাম দেওয়া রয়েছে।
ওয়াইচিং মারমা দাবি করেন, তার কেনা জায়গার পাশে বেনজীরের জায়গা থাকায় তৎকালীন পুলিশ সুপারের অনুরোধে ওই জায়গাগুলো তিনি এ যাবৎ দেখাশুনা করে যাচ্ছেন। তবে সেখানে বাগানবাড়ি, মৎস্য ও গরুর খামার তার নিজের বলে দাবি করেন মারমা।
লামা উপজেলায়ও জমি দখলের অভিযোগ
অপরদিকে, লামা উপজেলার ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীরের আরও ৫৫ একর জায়গা থাকার অভিযোগ এসেছে। ওই এলাকার স্থানীয়দের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ায় অভিযোগ বেনজীরের বিরুদ্ধে। স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ওই ৫৫ একর জায়গা এখনও বেনজীরের দখলে রয়েছে।
বান্দরবানের দায়িত্বে থাকা কক্সবাজারের দুর্নীতি দমন বিভাগের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিষয়গুলো মূলত ঢাকা কেন্দ্রীয় অফিস দেখভাল করছে।
ঢাকা থেকে নির্দেশনা পাওয়া গেলে বেনজীরের সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।