অসুস্থ বন্য হাতিটি এখন কিছুটা সুস্থ
মৌলভীবাজারের পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্টের লাঠিটিলা বন বিটে দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ একটি বন্যহাতি। সে হাতিটিকে বন থেকে খুঁজে বের করে চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ। চিকিৎসার পর এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছে অসুস্থ বন্য হাতিটি।
জানা যায়, গত ২২ মে থেকে ২৪ মে বিকেল পর্যন্ত মৌলভীবাজারের জড়ী উপজেলার দূর্গাপুর পেট্রোল বাংলা ও লবনখুলি এলাকায় লোকালয়ে মানুষে দ্বারে দ্বারে ঘুরছিল হাতিটি। এসময় স্থানীয় লোকজন হাতিটি অসুস্থ দেখতে পেয়ে কলাগাছ সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার সংগ্রহ করে খেতে দেয়। তখন মানুষের সাথে কোন সংঘাত ঘটেনি। তবে মানুষের বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে স্থানীয়রা হাতিটিকে আবার বনের দিকে তাড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় ও বন্যপ্রাণী বিভাগ জানায়, হাতিটি প্রায় সময় এভাবে বন ত্যাগ করে লোকালয়ে চলে আসতো। এরপর হাতিটির অসুস্থতার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বন বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল হাতিটির তথ্য সংগ্রহ করে বন দপ্তরে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করলে সেটির ভিত্তিতে বন দপ্তর দ্রুত চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, হাতিটি গভীর জঙ্গলে চলে গেছে। এরপর বনে খোঁজ করা হলেও হাতিটিকে তখন পাওয়া যায়নি। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পাহাড়ধস ও পাহাড়ি ঢলের মধ্যে হাতিটিকে বনে খুঁজে বের করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ ছয়দিন পর গত ৩০ মে (বৃহস্পতিবার) সমনভাগ বিটের আলামবাড়ী এলাকায় হাতিটির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান গিয়ে হাতিটিকে ট্রাংকুলাইজারের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন বলেন, "স্থানীয়দের সহযোগিতা হাতিটিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। আমরা দেখেছি হাতিটি মোটামুটি সুস্থ আছে ও নিজে চলাফেরা করতে পারছে। আমরা হাতিটিকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখবো, আশা করি হাতিটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।"
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের পশু চিকিৎসক ভেটেরিনারি সার্জন মো. মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, হাতিটির বয়স আনুমানিক ৬০-৭০ বছর হতে পারে। মূলত বার্ধক্যজনিত কারণে এটি অসুস্থ বলে প্রাথমিক ধারণা করা হয়েছে। হাতিটির কোমরে যে ক্ষত স্থান ছিল সেটি শুকিয়ে গেছে। হাতিটির চলাফেরা ও খাবার স্বাভাবিক রয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল সদর দপ্তরের (মৌলভীবাজার) কর্মকর্তা ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভেটেরিনারি পশু চিকিৎসক টিম হাতিটির চিকিৎসা করেছে। হাতিটির শরীরে এখনো অনেক শক্তি থাকায় কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছে।