মোবাইল ফোনে কথা বলার খরচ বাড়তে পারে কাল থেকেই, কিন্তু কেন?
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। বাজেট ঘোষণায় মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব এলে কাল থেকেই তা কার্যকর হতে পারে।
কেবল মোবাইল ফোনের টকটাইম বা ইন্টারনেট নয়, ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক সম্পর্কিত যত ধরনের হার কমানো বা বাড়ানোর প্রস্তাব থাকে, তা বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হয়। যদিও অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই থেকে।
বিদ্যমান আইনে এটির আইনি বৈধতা থাকলেও বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই শুল্কহার কার্যকরের বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন মহলের।
বাজেট বক্তৃতার পাশাপাশি একটি অর্থবিলও প্রকাশ করে সরকার। সেখানে শুল্কহার পরিবর্তন সম্পর্কিত বিষয়গুলো উল্লেখ করা থাকে।
ওই অর্থবিলের শেষ পাতায় 'প্রভিশনাল কালেকশন অব ট্যাক্সেস অ্যাক্ট, ১৯৩১'-এর অধীনে নতুন পরিবর্তন 'অবিলম্বে কার্যকর' বলে উল্লেখ করা হয়। এর অর্থ হলো, ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক সম্পর্কিত (মূলত পরোক্ষ কর) পরিবর্তনের প্রস্তাব বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হবে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. লুৎফর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'জুনের শুরুতে বাজেট ঘোষণার পর থেকে জুলাইয়ে অর্থবছর শুরু হওয়া পর্যন্ত যথেষ্ট সময় থাকে। কোনো আমদানি পণ্যের শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব থাকলে কেউ কেউ কম মূল্যের সুবিধা নিয়ে এ সময়ের মধ্যে পণ্য মজুত বা অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা যেন না করতে পারেন, সেজন্যই বাজেট পেশের দিন থেকে সব ধরনের পরোক্ষ করহার বাস্তবায়ন করতে হয়।'
তবে তিনি মনে করেন, বাজেট ঘোষণার দিনই এ ধরনের কর কার্যকর করা উচিত নয়। 'মানুষের আগে জানার অধিকার আছে, সে অনুযায়ী যাতে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।'
অবশ্য বাজেট প্রস্তাব শেষে শুল্কহার কার্যকর শুরু হওয়ার পর যদি পরবর্তীসময়ে বাজেট পাশের সময় ওই করহার কমানো হয়, সেক্ষেত্রে ভোক্তাই লোকসানের শিকার হন।
দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিবিএসকে বলেন, 'এর আগে একবার মোবাইল ফোনের টকটাইম ৫ শতাংশ বাড়িয়ে বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই তা কার্যকর করা হয়। পরে বাজেট পাশের সময় তা ২ শতাংশ কমানো হয়।'
'কিন্তু প্রায় তিন সপ্তাহে ভোক্তার পকেট থেকে যে বাড়তি টাকা কর্তন করা হয়েছে, তা আর ভোক্তাকে ফেরত দেওয়া হয়নি। ওই টাকা সরকারের কোষাগারেই গিয়েছে,' বলেন তিনি।
ওই কর্মকর্তা জানান, বাজেট ঘোষণার দিন অর্থমন্ত্রী সংসদে বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে অথবা কখনো কখনো তারও আগেই মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত আদেশ (এসআরও) পাঠানো হয়, যাতে তারা নতুন হারে গ্রাহকের কাছ থেকে কর কর্তন শুরু করেন।