মার্কিন আদালতে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে সমন জারি
সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরির দায়ের করা মামলায় মার্কিন জেলা আদালত- কলাম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট সৌদি আরবের প্রধান রাজপুত্রকে হাজির হওয়ার সমন জারি করেছে।
কানাডায় পলাতক সাবেক এক সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে (এমবিএস নামেই গণমাধ্যমে পরিচিত) আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। সাবেক গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, তিনি একটি ব্যর্থ হত্যাচেষ্টার টার্গেট ছিলেন।
এ প্রেক্ষিতে কলম্বিয়ার জেলা আদালত শুক্রবার এই সমন জারি করে। এর একদিন আগে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন যে, সৌদি যুবরাজ তাকে হত্যার জন্য কানাডায় একটি পেশাদার খুনিদের দলও পাঠিয়েছিলেন।
আল-জাবরি কানাডায় খুবই সুরক্ষিত অবস্থায় বসবাস করছেন।পুলিশ ছাড়াও তার প্রহরায় নিয়োজিত আছে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং রাজপুত্রের গোপন কার্যকলাপ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন এই কর্মকর্তাটি। এ কারণেই উচ্চাকাঙ্খী রাজপুত্রের প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন তিনি।
ইতোপূর্বে, সৌদি আরব সাদ আল-জাবরিকে ফেরত পাওয়ার জন্য ইন্টারপোলের কাছে রেড অ্যালার্ট জারির নোটিশ পাঠায়। তবে ইন্টারপোল বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। সৌদি কতৃর্পক্ষ কানাডার প্রতিও জাবরিকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তারা উচ্চপদস্থ এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে।
জাবরির দায়ের করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, এমবিএস আল-জাবরির দুই সন্তানকে আটকে রেখেছেন। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানী রিয়াদের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় জাবরির দুই সন্তান। তার অন্য আত্মীয়স্বজনকেও গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদেরকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছে যাতে, জাবরি দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। আর দেশে ফিরলেই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা সৌদি যুবরাজের।
সাদ আল-জাবরির দায়েরকৃত মামলার এসব অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি।
'এমবিএস এখন জোর তদবির চালাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছে। ট্রাম্প প্রশাসন যাতে আদালতের কাছে তাকে দায়মুক্তির চিঠি দেওয়ার ব্যবস্থা নেন- এজন্য তিনি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া জোরদার করবেন।' আল জাজিরাকে বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন সহযোগী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রুস ফেইন।
'এখানে মার্কিন আইনের একটা অদ্ভুত ব্যাপার রয়েছে। আদালতকে মামলাটি খারিজ করতে বলা যাবে, এ অজুহাতে যে আমেরিকার সঙ্গে বিদেশী একটি রাষ্ট্রের সম্পর্ক নষ্ট হবে, এবং এর কারণে রাষ্ট্রপ্রধান বা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বিচারিক হস্তক্ষেপ করা হবে' যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, 'নভেম্বরের [মার্কিন নির্বাচন] তাই সৌদি আরবের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এখনই গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে, সৌদি সরকারের শীর্ষ পর্যায় ও যুবরাজ এখন কথা বলছেন পম্পেও এবং ট্রাম্পের সঙ্গে, যাতে তাকে আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে রেহাই দেওয়া হয়।'
- সূত্র: আল জাজিরা