শিক্ষাখাতে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সাংসদদের
![](https://www.tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/01/09/national-parliament.jpg)
শিক্ষাখাতে ভয়াবহ দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। দুর্নীতি বন্ধ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ খাতে ব্যয় বরাদ্দে আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন।
এদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছয়জন সংসদ সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাব দেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে স্বতন্ত্র সদস্য (নাটোর-১) মো. আবুল কালাম বলেন, সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি। শিক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি, এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। টাকা ছাড়া কিছু করা যায় না।
তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর হাত থেকে শিক্ষাকে রক্ষা করতে হবে।
আরেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার (কুড়িগ্রাম-২) বলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ সব সময় জিডিপির লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে থাকে। শিক্ষাব্যবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, বৈষম্য লেগেই আছে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক, শিক্ষাক্রম ও আঞ্চলিক বৈষম্য রয়েছে। মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা একই কর্মস্থলে পাঁচ-সাত বছর থেকে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম–দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (বরিশাল-৪) পংকজ নাথ বলেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রশংসনীয়। তবে কুড়িগ্রামের চিলমারীর কেউ যদি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে নিয়োগ পান, তাহলে তিনি যোগদান করেন না। পার্বত্য এলাকায় আরও সমস্যা। এ কারণে শিক্ষক নিয়োগের পরেও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই নিয়োগ অঞ্চলভিত্তিক করার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
সংসদ সদস্যদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি হওয়ার ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি বলেন, এমপিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
জাতীয় পর্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। হয়েছে ভবনের পরিবর্তন, শিক্ষার মানের পরিবর্তন হয়নি। ভবন করা হলো, কিন্তু শিক্ষক নাই, বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হয় নাই। শিক্ষার উন্নয়নের থেকে দুর্নীতির দিকেই নজর বেশি সংশ্লিষ্টদের।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংসদদের বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিলেও দুর্নীতির অভিযোগগুলোর বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। দূরবর্তী জায়গায় অনেকে যোগদান করেন না, এটা ঠিক। তারপরও গত ৬ মাসে ৯৯ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইন সংশোধনের মাধ্যমে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গবেষণা খাতে বরাদ্দ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গবেষণা খাতে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রতিষ্ঠা করা এবং গবেষণা খাতে সর্বপ্রথম সরকারি বরাদ্দ দেওয়া শুরু করেছিলেন। যার সুফল সরাসরি আমরা পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, গবেষণায় ১ লাখ টাকা দেওয়া হয় এটা সত্য নয়। নানান খাত থেকে গবেষণায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। অনেক সময় দেখি গবেষণায় বরাদ্দকৃত অর্থও যথাযথভাবে খরচের পরও সেই অর্থ রয়ে যায়।