আপন-পর কিছু জানি না, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার জিরো টলারেন্স নীতি অটল আছে। আমি আপন-পর কিছু জানি না, দুর্নীতি যেই করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
আজ রোববার বিকেল ৪টায় গণভবনে তার সদ্য সমাপ্ত তিন দিনের চীন সফর নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে পিএসসির প্রশ্নফাঁস ও সরকারি কর্মকর্তাদের অন্যান্য দুর্নীতির ঘটনা জনসম্মুখে আসার প্রসঙ্গ উঠলে শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা কারো দুর্নীতির ঘটনা অত্যন্ত হতাশজনক এবং তা মেনে নেওয়া যায় না। এরা অন্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কথা বলবে, আবার নিজেরা হাজার হাজার কোটি টাকা বানাবে, বিদেশে পাচার করবে এটা তো অগ্রহণযোগ্য। '(দুর্নীতির বিরুদ্ধে) হাত যখন দিয়েছি, তখন সে যেই হোক তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না। এখানে আপন - পর কোনোকিছু আমি জানি না, আমি যখন (দুর্নীতির বিরুদ্ধে) জিরো টলারেন্সের কথা বলে আসছি, তখন আমি এটা করেই ছাড়ব।"
প্রধানমন্ত্রী তাঁর চীন সফরকে সফল অভিহিত করে একে বাংলাদেশের কূটনীতির এক মাহেন্দ্রক্ষণ বলে উল্লেখ করেছে। জানান বাংলাদেশের আবাসন ও আতিথেয়তা খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন চীনের ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখান।
চীন সফর সম্পর্কে তাঁর লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক সফরে আমি গত ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করি। ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমি এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। এরপর দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না— শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
সরকারপ্রধান বলেন, সম্মেলনে আমি চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই। এ সময় অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস, বিডা, বিএসইসি এবং চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বক্তব্য দেন এবং তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ১০টি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ১৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়।