যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করলে পাল্টা জবাব দেয়ার হুমকি পুতিনের
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির অভ্যন্তরে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে মস্কোও 'পাল্টা জবাব' দিতে বাধ্য হবে।
রোববার (২৮ জুলাই) সেন্ট পিটার্সবার্গে নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে এক ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ন্যাটোকে সমর্থন জানানোর জন্য ২০২৬ সালের মধ্যে জার্মানিতে দীর্ঘ পাল্লার ও হাইপারসনিক মিসাইল স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসনের কারণে স্নায়ুযুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা শক্তির মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গে নৌবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, "যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনাগুলো অনুসরণ করে তাহলে আমরা মধ্যবর্তী এবং স্বল্প-পাল্লার অস্ত্র মোতায়েন করার বিষয়ে আমাদের স্থগিতাদেশকে আর মেনে নেব না।"
এ জাতীয় পদক্ষেপের প্রস্তুতি 'চূড়ান্ত পর্যায়ে' উল্লেখ করে রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, একবার প্রস্তুত হয়ে গেলে ১০ মিনিটের মধ্যে রাষ্ট্র, সামরিক এবং শিল্প লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানা সম্ভব হবে।
১৯৮৭ সালের মার্কিন-সোভিয়েত চুক্তি অনুযায়ী, স্থল থেকে উৎক্ষেপণ করা মধ্যবর্তী-পাল্লার পারমাণবিক-সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে চুক্তি প্রত্যাহার করেছিল।
পরবর্তীতে মস্কোও চুক্তি প্রত্যাহার করে নিলেও পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়া চুক্তির শর্তাবলি মেনে চলে এমন জার্মানিতে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করা হলে দেশটি আর চুক্তি মেনে চলবে না।
কোল্ড ওয়ারের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জার্মানিতে বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপন করেছে এবং ইতোমধ্যেই ইউরোপ জুড়ে স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে।
ওয়াশিংটন এবং বার্লিন ঘোষণা দিয়েছে, নতুন স্থাপনার মধ্যে এসএম-৬ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক সক্ষম টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নয়নমূলক হাইপারসনিক অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
জার্মানি এ পরিকল্পনাকে সমর্থন করে জানিয়েছে, রাশিয়া ইতোমধ্যে কালিনিনগ্রাদে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে যা জার্মান শহরগুলোতে আঘাত হানার সামর্থ্য রাখে।
গত সপ্তাহে রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছিলেন, মার্কিন পদক্ষেপের জবাবে মস্কো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারে।