হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানে নিহত
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানে নিহত হয়েছেন।
হামাস এবং ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড পৃথক বিবৃতিতে আজ (৩১ জুলাই) হানিয়ার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হামাস হানিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছে, "তেহরানে তার বাসভবনে বিশ্বাসঘাতক ইহুদিবাদী হামলায়" তিনি নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ইসমাইল হানিয়া।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড-এর বিবৃতিতে বলা হয়, "আজ ভোরে তেহরানে ইসমাইল হানিয়ার বাসভবনে হামলা চালানো হয়; যার ফলে তিনি এবং তার একজন দেহরক্ষী শহীদ হন। কারণটি তদন্তাধীন এবং শীঘ্রই তার মৃত্যুর কারণ জানানো হবে।"
কে এই ইসমাইল হানিয়া?
ইসমাইল হানিয়া ১৯৬২ সালে গাজা শহরের কাছে আল শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাবা-মা ১৯৪৮ সালে তাদের বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তিনি ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি সাহিত্য অধ্যয়ন করেছেন।
আশির দশকে রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে হামাসের উত্থানের সময় সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৯ সালে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে তাকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয়।
এক বছর নির্বাসনে থেকে ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন। তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা ও মতাদর্শিক গুরু শেখ ইয়াসিনের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পাওয়ার পর হামাসে তাঁর পদমর্যাদা বাড়ে।
ইসমাইল হানিয়া ২০০৬ সালে গাজায় হামাসের প্রধান হন এবং সংক্ষিপ্তভাবে একটি ফিলিস্তিনি ঐক্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা অভ্যন্তরীণ সংঘাতের পর ভেঙে দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে হানিয়াকে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে মনোনীত করা হয়। সেসময় হামাসের লক্ষ্য ছিল, জনসাধারণের মাঝে নিজেদের ভাবমূর্তি উন্নত করা।
তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতার এবং তুরস্ক থেকে হামাসের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গাজা যুদ্ধের অবসান ও জিম্মি পরিস্থিতি মোকাবেলায় আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।