কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে ফেলায় জাবি অধ্যাপককে কারণ দর্শানোর নোটিশ
নিজ কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানার কাছে লিখিত বক্তব্য জানতে চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) আবু হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "বাংলা বিভাগের সভাপতির কক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনা আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে দেখেছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে উক্ত ঘটনার বিষয়ে অধ্যাপক শামীমা সুলতানার লিখিত বক্তব্য জানতে চেয়েছে সিন্ডিকেট।"
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গুলি চালানো ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অফিসকক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছাবি নামিয়ে ফেলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।
পরের দিন (২ আগস্ট) ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শামীমা সুলতানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দেয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন 'বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ'।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, "আমি এর উত্তর দেব। তবে এখানে আমার কিছু প্রশ্ন আছে।"
তিনি বলেন, "যারা সিন্ডিকেটে বসেছে, সবাই এখানে বৈধ কিনা। যেহেতু একজন শিক্ষকের ব্যাপার, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলেন কিনা। সিন্ডিকেটে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা সবাই ২০০২ সালের প্রজ্ঞাপন মেনেছেন কিনা। সিন্ডিকেট সদস্যরা নিজ বিভাগে এটি নিশ্চিত করেছেন কিনা।"
তিনি আরও বলেন, "আমি ল'ইয়ারের সাথে কথা বলবো। আমি এটা কতটুকু মেনে নেব বা মেনে নেওয়ার প্রক্রিয়াটা কি হবে— আমি আমার জায়গায় স্বচ্ছ; আমার বক্তব্যে অটল থাকবো।"
"যার হাতে আমার সন্তানের রক্ত, তার ছবি আমি লাগাবো না। এখানে যখন সিন্ডিকেট বসেছে, তখনও আমার সন্তানের রক্ত ঝরেছে," যোগ করেন এই অধ্যাপক।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রীদের কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।