ধীরে ধীরে খুলছে শপিং মল, স্বাভাবিক হচ্ছে হোটেল-রেস্তোরাঁ
কোটা সংস্কার এবং পরবর্তীতে সরকার পতন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন সপ্তাহের অস্থিরতা শেষে খুলতে শুরু করেছে রাজধানীর শপিং মলগুলো।
বর্তমানে ক্রেতার সংকট থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমেছে। এছাড়া, হোটেল-রেস্তোরাঁরাগুলোতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মল ও হোটেল-রেস্তোরাঁ ঘুরে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে।
টানা কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল খুলেছে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স। তৈরি পোশাক ব্র্যান্ড অঞ্জনসের বসুন্ধরা ব্রাঞ্চের ইনচার্জ কাওসার আহমেদ টিবিএসকে বলেন, "কয়েকদিন বন্ধ ছিল। খোলার পর কিছু কাস্টমার এসেছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। আমাদের ধানমন্ডি ব্র্যাঞ্চ বুধবার থেকে খুলেছে। জুলাইয়ের ১৫ তারিখের পর থেকে অস্বাভাবিকভাবে কাস্টমার কমে যায়। তবে এখন স্বাভাবিক হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।"
রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা নিউ মার্কেট। এ এলাকায় অনেকগুলো মার্কেট থাকায় মানুষের সমাগমও থাকে সবচেয়ে বেশি। নূরজাহান শপিং মল শুক্রবার থেকে খুলেছে। আর নিউ মার্কেট খুলেছে বৃহস্পতিবার থেকে।
নিউ মার্কেট এলাকার নূরজাহান শপিং কমপ্লেক্স এর বিক্রেতা পারভেজ হোসেন বলেন, "ক্রেতা কম। গত রোববার থেকে মার্কেট বন্ধ ছিল। আজকেই খুললাম। এখনও কাস্টমার তেমন আসছে না।"
ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক আছে জানিয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, "পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও দোকানপাট খোলার চেষ্টা করছে। তারা পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ এতো বড় একটি পরিবর্তন এবং এর পাশাপাশি থানাগুলোও সচল না। থানাগুলো সচল হলে পুরোদমে কর্মকাণ্ড শুরু হবে।"
প্রায় একই কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, "প্রায় এক মাস ধরে সংকট চলছে। অনেক দোকানদার ভাড়া দিতে পারছেন না; কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না। কারণ দোকান বন্ধ ছিল, ক্রেতা ছিল না। তবে এখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। আশা করি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।"
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করে শেখ হাসিনা সরকার। প্রথম দিকে দিনে দুই–তিন ঘণ্টা করে কারফিউ শিথিল করা হলেও পরে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হয়। এরপর আন্দোলন রূপ নেয় অসহযোগ আন্দোলনে।
সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এসময়গুলোতে বেশিরভাগ সময়ই শপিংমল ও হোটেল রেস্তোঁরা বন্ধ ছিল।
এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বেচাকেনা স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা। নবাবী ভোজের নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, "বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টার জন্য আমাদের শাখাগুলো খোলা হয়েছিল। তবে শুক্রবার পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক। মানুষজন আসছেন। অনেকেই এখন ঘুরতে বের হচ্ছেন। রাস্তাঘাটেও শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও নিরাপত্তা দিচ্ছেন।"