ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে নেই মেসি-রোনালদো, ২১ বছরে প্রথম
একটা সময় ছিল, যখন ব্যালন ডি'অর জেতা মানেই সেখানে নাম থাকতো লিওনেল মেসি বা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালাদোর। গত ১৬ বছরে পুরস্কারটি ১৩ বার ভাগাভাগি করেছেন ফুটবলের এই দুই মহাতারকা। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যালন ডি'অর জেতার লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন নাম, কেউ কেউ জিতেছেনও। এবার পুরস্কারটি জেতার লড়াইয়ে সংক্ষিপ্ত তালিকায় নাম নেই মেসি-রোনালদো কারও।
২০২৪ সালের ব্যালন ডি'অরের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে ফরাসী সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল। অনুমতিভাবেই ৩০ জনের তালিকায় আছেন রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম ও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড। জায়গা হয়নি মেসি-রোনালদোর। ২০০৩ সালের পর থেকে ২১ বছরে এবারই প্রথম দুজনের কারও নাম নেই তালিকায়। আগামী অক্টোবরে প্যারিসের বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া পুরস্কার।
এই পুরস্কারের লড়াইটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে মেসি ও রোনালদোর মধ্যে। ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাদের ঝুলিতেই গেছে ব্যালন ডি'অর। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মেসি রেকর্ড আটবার জিতেছেন পুরস্কারটি। পর্তুগিজ সুপারস্টার রোনালদোর দখলে পাঁচটি ব্যালন ডি'অর।
মূলত ইউরোপিয়ান ফুটবলের পাঠ চুকিয়ে অন্যখানে ঠিকানা গড়ায় পুরস্কারটির দাবিদার থাকার সম্ভাবনা কমে গেছে মেসি-রোনালদোর। মেসি খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে, রোনালদো খেলছেন সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসেরের হয়ে।
২০১৭ সালের পর থেকে ব্যালন ডি'অর জেতার লড়াইয়ে দাপট কমে রোনালদোর। ২০১৮ সালে পুরস্কারটি জেতেন রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদ্রিচ, পরের বছর পান মেসি। করোনার প্রকোপে ২০২০ সালে ব্যালন ডি'অর দেওয়া হয়নি। ২০২১ সালে পুরস্কারটি জেতেন মেসি। পরের বছর ব্যালন ডি'অর ওঠে রিয়াল মাদ্রিদে থাকা করিম বেনজেমা। বিশ্বকাপ জিতে ২০২৩ সালে আবারও পুরস্কারটি নিজের করে নেন মেসি।
এবারের ব্যালন ডি'অর জেতার লড়াইয়ে ভিনিসিয়ুসকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে রিয়ালের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম ছিলেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দলের ২-০ গোলের জয়ে একটি গোল করেন ভিনিসিয়ুস। ৬ গোল করে নির্বাচিত হন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়।
লা লিগার গত মৌসুমে ১৫ গোল করেন ভিনিসিয়ুস। এ ছাড়া স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে করেন হ্যাটট্রিক। জাতীয় দলেও ছিলেন উজ্জ্বল। কোপা আমেরিকার সর্বশেষ আসরে গ্রুপ পর্বে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন তিনি। হলুদ কার্ড দেখায় কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা হয়নি তার, এই ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল।
ব্যালন ডি'অর জেতার আরেক দাবিদার বেলিংহ্যাম। রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েই আলো ছড়াতে শুরু করেন ইংল্যান্ডের এই মিডফিল্ডার। লা লিগার গত আসরে ২৮ ম্যাচে ১৯ গোল করেন তিনি, সতীর্থদের দিয়ে করান ৬টি গোল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্বার ছন্দে ছিলেন বেলিংহ্যাম। ১১ ম্যাচে গোল করেন ৪টি, অ্যাসিস্ট ছিল ৫টি। গত মৌসুমে রিয়ালের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪২ ম্যাচে ২৩ গোল করার পাশাপাশি ১৩টি অ্যাসিস্ট করেন তিনি।
অনেকে আবার হলান্ডের হাতে দেখতে পাচ্ছেন ব্যালন ডি'অরের ট্রফিটি। ম্যানচেস্টার সিটির চতুর্থ শিরোপা জয়ে তিনি ছিলেন পেপ গার্দিওলার প্রধান অস্ত্র। চোটের কারণে সব ম্যাচ খেলতে না পারলেও দলের শিরোপা জয়ে হলান্ডের বড় অবদান ছিল। প্রিমিয়ার লিগে ৩১ ম্যাচে ২৭টি গোল করেন তিনি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত মৌসুমে সিটির হয়ে ৪৫ ম্যাচে তার গোল ৩৮টি।