কাস্টিং কাউচ: যৌন হয়রানি ও অসম পারিশ্রমিকের বিরুদ্ধে লড়ছেন ভারতীয় সিনেমা শিল্পের নারীরা
২০১৭ সালে জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক জনি লুকোস কেরালার মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্প তথা 'মলিউড' সুপারস্টার মোহনলালকে তার সম্পর্কে থাকা একটি গুঞ্জন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন।
গুঞ্জনটি ছিল মোহনলাল তিন হাজার তম নারীর সাথে রাত কাটানোর পর উদযাপন করেছিলেন। এর জবাবে মোহনলাল ব্যঙ্গ করে বলেন, আসলে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে।
ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মশলা দিয়ে নারীবিদ্বেষ এবং পিতৃতন্ত্র দেখানো ও জয়জয়াকার করা হয়।
এতদিন সবাই জানত যে পুরো ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পগুলোতে যৌন নিগ্রহ বিরাজমান, কিন্তু এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইতো না। এক মলিউড অভিনেত্রী সর্বপ্রথম এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভিনেতা দিলীপের (৫৬) বিরুদ্ধে গাড়ির মধ্যে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন এক মালয়ালম অভিনেত্রী। সে বছরের জুলাইয়ে অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু এর কিছুদিন পরই জামিনে বের হন অভিনেতা।
পুনরায় বিচার শুরু হলেও বিচারকার্য প্রভাবিত করার অভিযোগ আনা হয় দিলীপের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা আমলে নেননি কেরালা হাইকোর্ট। এরপরও দমে যাননি অভিনেত্রী।
অভিনেত্রীর পাশে তখন দাঁড়াতে থাকেন ইন্ডাস্ট্রির একাধিক সহকর্মী। বিষয়টি নিয়ে বেশ চাপে পড়ে কেরালা সরকার। এরপরই মলিউডে নারীদের ওপর হওয়া নির্যাতন তদন্তের জন্য গঠন করা হয় হেমা কমিটি।
এছাড়াও ২০১৭ সালেগড়ে ওঠে উইমেন ইন সিনেমা কালেক্টিভ (ডব্লিউসিসি) নামক একটি সংগঠন। এটি চলচ্চিত্র জগতে নারীদের লিঙ্গ সমতার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে কাজ করে। এই সংগঠনের কিছু সদস্যরাও মালয়ালম সিনেমায় কাজ করেন।
ডব্লিউসিসি-র চাপে রাজ্য সরকার নারী অভিনেত্রীদের যৌন নির্যাতনের তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করে।
হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সারদা এবং অবসরপ্রাপ্ত আমলা কেবি ভালসালা কুমারী। কমিটি ২০১৯ সালে জমা দেওয়া ২৩৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলেও, প্রায় পাঁচ বছর পর চলতি বছরের ১৯ আগস্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে।
বিচারপতি হেমা কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর নারী শিল্পীদের উপর যৌন নিগ্রহ ও অমানবিক কাজের পরিবেশের বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে এবং রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে যৌন সুবিধা আদায় করা তথা কাস্টিং কাউচ নিয়ে প্রথমবারের মতো তদন্ত হয়। বিশ্বের সব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই কাস্টিং কাউচ নিয়ে আলোচনা আছে, তবে এ নিয়ে কেউ কোনোদিন আইনের আশ্রয় নেননি বা নিতে পারেননি।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
ভারতের ২০টিরও বেশি শহর এবং অঞ্চলে ৩০ টিরও বেশি ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। এই চলচ্চিত্র শিল্পগুলোর সর্বত্রই পিতৃতন্ত্র এবং বিদ্বেষকে মহিমান্বিত করা হয়।
হেমা কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর এই বিষয়গুলো নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়।
এসবের জেরে গত ২৫ আগস্ট পরিচালক রঞ্জিত কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র (মোশন পিকচার) একাডেমির প্রধানের পদ থেকে এবং অভিনেতা সিদ্দিক অ্যাসোসিয়েশন অব মালায়লাম মুভি আর্টিস্টস (এএমএমএ)- এর সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
৬৪ বছর বয়সী অভিনেতা মোহনলাল গত ২৭ আগস্ট এএমএমএ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের পরে এএমএমএ কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিনেতা মুকেশের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আরেক মলিউড সুপারস্টার সুরেশ গোপী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।
গোপী কেরালা থেকে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংসদ সদস্য। অন্যদিকে, মুকেশ কেরালার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিএম) এর দুইবারের বিধায়ক। এর ফলে তার পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছেন বিরোধীরা।
এএমএমএ-র সহ-সভাপতি বর্ষীয়ান অভিনেতা জগদীশ বলেন, 'আমরা কমিটির সুপারিশকে স্বাগত জানাই। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ অনুকূল হতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা আমাদের নেওয়া উচিত এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয়। নারীদের আর কষ্ট পেতে হবে না।'
কী বলছে রিপোর্ট
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার সাড়ে চার বছর পর কেরালার সরকার এই প্রতিবেদনকে প্রকাশ করেছে। ২৯০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে ৪৪টা পৃষ্ঠা নেই, কারণ নির্যাতন ও হয়রানির শিকার নারীরা সেখানে অভিযুক্ত পুরুষদের নাম উল্লেখ করেছেন।
হেমা-কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে কীভাবে কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা, লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীদের ওপর নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে।
কমিটি 'অদ্ভূত' আরও একটি তথ্য জানতে পেরেছে। শুধু নারী নয়, কিছু পুরুষও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।এমনও হয়েছে এর কারণে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদেরও তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে সিনেমা থেকে বেআইনিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বলিউডেও রমরমা
মুম্বাইভিত্তিক বলিউড দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। এখানকার নারী অভিনেতারাও অতীতে তাদের সঙ্গে হওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে সরব হয়েছেন।
এদের একজন ইশা কোপ্পিকার, তিনি বলিউডে 'স্বজনপোষণ' তথা 'নেপোটিজম' এবং কাস্টিং কাউচের শিকার হওয়ার কথা বলেছিলেন।
একসময় বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শক্তি কাপুর একজন নারী সাংবাদিককে অশ্লীল প্রস্তাব দিয়েছিলেন। একটি 'স্টিং অপারেশন' (একটি নিউজ চ্যানেলের গোপন ক্যামেরা দ্বারা ধারণ করা ভিডিও) -এ তার প্রমাণও পাওয়া যায়। এর ফলে তোপের মুখে পড়েন শক্তি কাপুর।
২০০৫ সালে অভিনেতা আমন ভার্মার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছিল, যাতে দেখা যায় তিনি একটি চলচ্চিত্রে কাজ দেওয়ার বিনিময়ে একজন অভিনেত্রীর কাছ থেকে যৌন সুবিধা চাইছেন।
বলিউডের প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে জানিয়েছেন, কাস্টিং কাউচের মুখোমুখি হওয়া ইন্ডাস্ট্রির অনেকের সঙ্গেই তিনি পরিচিত।
অভিনেত্রী প্রাচী দেশাইও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন।
অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা তার সঙ্গে হওয়া কাস্টিং-কাউচের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং স্বরা ভাস্করও অসংখ্যবার যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
বলিউডের চিত্রনাট্যকার মায়াঙ্ক তিওয়ারি আরটিকে বলেছেন, হেমা কমিটির অনুসন্ধানের প্রতিবেদন ভয়ঙ্কর।
তিনি বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ছাড়া একটি শিল্পে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের তদন্ত মাঝে মাঝেই করা উচিত। কেরালার চলচ্চিত্র শিল্প সুসংগঠিত, কারণ রাজ্যটি কমিউনিস্ট সরকার শাসিত। তবে অন্যান্য রাজ্য সরকারও এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে।
টলিউডের গোপন রহস্য
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য তেলেঙ্গানার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির নাম 'টলিউড'। এই ইন্ডাস্ট্রির চলচ্চিত্রগুলো বলিউডের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী।
এখানকার নাগরিক সমাজের দাবি এবং ২০১৯ সালে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) রিটের পরিপ্রেক্ষিতে 'মি টু' আন্দোলনের পর সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে।
২৫ সদস্যের কমিটিতে নগর পুলিশ কমিশনার এবং সরকারি কর্মকর্তা, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং অন্যান্যরা ছিলেন।
এক বছর আগে টলিউড অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডি ইন্ডাস্ট্রিতে 'মি টু' ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলেন। এই অভিনেত্রী কাস্টিং কাউচকার হিসেবে ইন্ডাস্ট্রির বড় বড় ব্যক্তিদের নাম নিয়েছিলেন এবং যৌন হয়রানি বন্ধের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন।
উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আবার একটি সাব-কমিটি গঠন করে, যা ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ২০ বারের বেশি বৈঠক করে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়।
তৎকালীন বিআরএস (ভারত রাষ্ট্র সমিতি) সরকার তা-ও স্থগিত করে দেয়। ২০২৩ সালে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর নাগরিক সমাজের সদস্যরা একাধিক বার এই প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে আনার জন্য অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
সাব কমিটির সদস্য এবং জেন্ডার স্টাডিজের স্কলার এ সুনীতা আরটিকে বলেছেন, তেলেঙ্গানা সরকার প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে আনছে না, কারণ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে তাদের চাপ দেওয়ার কেউ নেই।
তিনি বলেন, তেলেঙ্গানায় উচ্চ পর্যায়ের কমিটির নামী চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরাও নীরব ভূমিকা পালন করছেন। এর কারণ হতে পারে কমিটিতে নারীদের ক্ষমতা সীমিত, অথবা তেলেঙ্গানা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে (টিএফআই) নেতৃত্ব পর্যায়ে খুব কম নারী রয়েছেন। প্রকৃত পক্ষেই সম্পাদনা, সিনেমাটোগ্রাফি, পরিচালনার মতো বিভাগগুলোতে নারীর সংখ্যা কম।
তবে হেমা কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর তেলেঙ্গানা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নারীরাও গত সপ্তাহে 'দ্য ভয়েস অব উইমেন' নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন, যাতে রাজ্য সরকারকে ২০২২ সালের প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য চাপ দেওয়া যায়।
একইভাবে, হেমা কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর কেরালার সীমান্তবর্তী তামিলনাড়ুর টিভি রিয়েলিটি শোয়ের প্রতিযোগী সনম শেট্টি মুখ খোলেন।
তিনি বলেন, তামিল চলচ্চিত্র শিল্পেও কাস্টিং কাউচ রয়েছে এবং তিনি নিজেও এর ভুক্তভোগী।
'পরিবর্তনের আন্দোলন'
যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও এসব বিষয়ে সরব থাকায় মলিউডের অনেক নারী শিল্পী পেশাগতভাবে ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
ডব্লিউসিসি'র সদস্য এবং দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী পার্বতী থিরুভোথু একবার বলেছিলেন, ডব্লিউসিসি'র কেউ কোনো কাজের অফার পাচ্ছে না।
অন্যদিকে রাজ্য সরকার এখনও অপরাধীদের পুরস্কৃত করছে। তিনি মূলত রঞ্জিতের পরিবর্তে চলচ্চিত্র নির্মাতা শাজি এন করুণকে কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করেছেন। করুণের বিরুদ্ধে উঠতি নারী পরিচালকদের মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
টলিউড অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডিও যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে কথা বলা নারীদের পেশাগত চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করার পরে তিনি কী কী প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং তাকে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবং তেলেঙ্গানা দুটোই ছাড়তে হয়েছিল।
সুনীতা বলেন, 'টলিউডে লড়াই করছিল জুনিয়র আর্টিস্ট ও ডায়লগ আর্টিস্টদের মতো মানুষেরা, যারা ইন্ডাস্ট্রিতে একেবারেই শক্তিহীন। অন্যদিকে, তেলেঙ্গানায় যারা লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের ইন্ডাস্ট্রি ছাড়তে হয়েছে। নারী সংগঠনগুলো তাদের সমর্থন করেছে। একটি জনস্বার্থ মামলার জবাবে আদালতের নির্দেশের কারণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সরকার ইচ্ছা করে করেছিল এমনটি নয়।'
তিনি আরও বলেন, সরকার হয়তো প্রতিবেদন প্রকাশের আগ্রহ দেখাবে না, কারণ এর অর্থ হবে ব্যবস্থা নেওয়া। কেরালায় ডব্লিউসিসি সদস্যরা রিপোর্ট প্রকাশের জন্য সরকারকে চাপ দেওয়ায় অবশেষে তা প্রকাশ পায়।
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সম্পাদক, ডব্লিউসিসির প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য এবং কেরালার বিশ্বখ্যাত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সাবেক আর্টিস্টিক ডিরেক্টর বীণা পাল আরটিকে জানান, তারা পরিবর্তন চান।
তিনি বলেন, 'কমিটি অনেক কিছু তুলে ধরেছে এবং এখন আমরা মিডিয়ার মাধ্যমেও অনেক কিছু শুনছি; যা ঘটছে তাতে আমরা বেশ অবাক হয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা শুধু যৌন হয়রানির দিকে নজর দিচ্ছি না। সব ধরনের পরিবর্তন আনার জন্য এটি একটি দুর্বার আন্দোলন। আমরা বিশ্বাস করি পরিবর্তন প্রয়োজন। যা কিছু অসংগতি আমরা তার পরিবর্তন চাই। জানি এটি করা সহজ নয়, অনেক সময় ও প্রচেষ্টা লাগবে।'
তিওয়ারির মতে মুম্বাইয়ে ইতোমধ্যেই পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে 'মি টু' আন্দোলনের পর অনেক কিছুই বদলে গেছে। ইন্ডাস্ট্রিতে এখন আর নারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া মন্তব্য, নারীদের প্রতি অপ্রীতিকর কিছু এবং ডাবল মিনিং কোনো মন্তব্য সহ্য করা হয় না। এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন, গত চার বছরে আমি এই পরিবর্তন দেখেছি। বলা বাহুল্য, বেতন-অসমতার বিষয়টি রয়ে গেছে। বলিউডে এমন কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
লেখিকা: সরিতা এস বালান। তিনি ভারতের তিরুবনন্তপুরমভিত্তিক একজন স্বাধীন সাংবাদিক।