পাকিস্তানের জলসীমায় তেল-গ্যাসের বিশাল মজুতের সন্ধান পাওয়ার দাবি
পাকিস্তানের সমুদ্রসীমায় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুদের সন্ধ্যার পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। এর পরিমাণ এতই বেশি যে, সম্পদগুলো সঠিক ব্যবহারে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে যেতে পারে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পেট্রোলিয়াম ও গ্যাসের মজুত নিশ্চিতে একটি দেশের সহযোগিতায় তিন বছরে ধরে জরিপ চালায় পাকিস্তান। ভৌগোলিক এই জরিপের মাধ্যমে অবশেষে তেল ও গ্যাসের মজুতের অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছে দেশটি। গতকাল (শুক্রবার) একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম ডন।
এক্ষেত্রে শিগগিরই অনুসন্ধান কাজ শুরু করতে পারে পাকিস্তান। কূপ খনন ও তেল উত্তোলনের এই কাজটি করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
পাকিস্তানি ঐ কর্মকর্তারা মনে করেন, তেল ও গ্যাস ছাড়াও সমুদ্র থেকে আরও অনেক মূল্যবান খনিজ ও উপাদান আহরণ করা যেতে পারে। দ্রুত উদ্যোগ নিলে ও সঠিকভাবে কাজ করলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে তা সহায়ক হবে।
ধারণা করা হচ্ছে যে, এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল ও গ্যাসের মজুত হতে পারে। বর্তমানে তেল মজুতে শীর্ষে রয়েছে ভেনেজুয়েলা। দেশটির প্রায় ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ রয়েছে।
সর্বাধিক অপরিশোধিত শেল তেলের মজুদ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। আর সৌদি আরব, ইরান, কানাডা ও ইরাক শীর্ষ পাঁচে।
পাকিস্তানের তেল, গ্যাস রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আরিফ বলেন, "যদিও আমাদের আশাবাদী থাকা উচিত। তবে এটার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই যে, যতটা ধারণা করা হচ্ছে ততটা মজুদ পাওয়া যাবে।"
মোহাম্মদ আরিফ আরও বলেন, "এটা যদি গ্যাসের মজুদ হয়ে থাকে, তবে আমরা এলএনজির পরিবর্তে তা ব্যবহার করতে পারবো। আর এটা যদি তেলের মজুদ হয়ে থাকে, তবে আমরা আমদানিকৃত তেলের পরিবর্তে তা ব্যবহার করতে পারবো।"
গত কয়েক বছর ধরে পেট্রোলিয়ামের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে ইউটিলিটি বিল বাড়ছে। তার সঙ্গে মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় জর্জরিত পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। এমন মুহূর্তেই তেল-গ্যাস পাওয়ার এই খবর এল।
পেট্রোলিয়াম আমদানিতে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বড় একটা অংশ ব্যয় হয়। তাই বড় কোনো তেল ও গ্যাসের মজুত পাওয়া গেলে তা দেশটির জ্বালানি সংকট মেটাতে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
এক বছরে পাকিস্তানের তেলের মজুত ১৪ শতাংশ কমে গেছে। এছাড়া গ্যাসের মজুতও কমেছে ৫ শতাংশ।
এই পরিস্থিতিতে গত মাসে পাকিস্তান সরকার ২০টি অফশোর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র আহ্বান করার পরিকল্পনার কথা জানায়।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান