সাকিবকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলায় শান্ত বললেন, ‘খুব সাহসী প্রশ্ন’
এমন সাকিব আল হাসানকে শেষ কবে দেখেছেন? নিশ্চিতভাবেই আপনাকে রেকর্ড ঘাটতে হবে। ব্যাটে-বলে কোনোটাতেই কিছু করতে পারেননি, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন ম্যাচ কমই গেছে তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টে ঝলমলে পারফরম্যান্স না করতে পারলেও অবদান ছিল অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের, বল হাতে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এরপর কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে যাওয়া সাকিব সারের হয়ে ম্যাচে নেন ৯ উইকেট।
কিন্তু ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে অচেনা এক সাকিবের দেখা মিললো। ২৮০ রানে হেরে যাওয়া ম্যাচে ব্যাটে-বলে থেকে গেলেন একেবারে বিবর্ণ। দুই ইনিংসে ৫৫ রান করা বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ২১ ওভার বোলিং করে পাননি কোনো উইকেট। তার করা ওভারের সংখ্যাও বিস্ময় জাগানিয়া। দলের প্রধান স্পিনার হয়েও নিয়মিত বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম হাত ঘুরিয়েছেন তিনি। সারের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ ওভার বোলিং করেছিলেন সাকিব।
ব্যাটে-বলে রান নেই, কম ওভার বোলিং করা, ফিল্ডিংয়ে হতাশাজনক পারফরম্যান্স; এর সঙ্গে ইনজুরি। সব মিলিয়ে চেন্নাই টেস্টের পর সাকিবকে দল থেকে বাদ দেওয়ার প্রশ্ন উঠে গেল। এমন পারফরম্যান্সের পর সাকিবকে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে নেওয়া হবে কিনা, সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নটি শুনতে হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক অবশ্য সাকিবকে বাদ দেওয়া প্রশ্নে অবাক হলেন, বললেন, 'খুব সাহসী প্রশ্ন, মাশাআল্লাহ।'
সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে কিছুটা কৌশলী শান্ত বলেন, 'অধিনায়ক হিসেবে আমি যেটা দেখি, শুধু সাকিব ভাই বলে বলছি না, আমি দেখি যে, কে কতটুকু কষ্ট করছে এবং কামব্যাক করার জন্য যা যা করা দরকার, সে কাজগুলো করছে কি না। কিংবা দলের প্রতি ইন্টেনশন কী রকম। এই জিনিসগুলো আমি খেয়াল রাখি। আমি চেষ্টা করি, ওই ক্রিকেটার দলকে দেওয়ার জন্য কতোটুকু প্রস্তুত, শতভাগ কি না।'
সাকিবের বাদ পড়ার আলোচনা উঠেছে বলে যে এমনটা বলছেন না, সেটা পরিষ্কার করতে চাইলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'অনেকে ভাবতে পারেন, সাকিব ভাই দেখে আমি বলছি। তবে এ রকম নয়। নাহিদ রানা থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, সবার জন্য আমি একই জিনিস দেখার চেষ্টা করি। এমন নয় যে রান করছে বা রান করছে না। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার মনে হয়, তার প্রস্তুতি কেমন, দলের প্রতি তার চিন্তাভাবনা কেমন, দলকে ভালো কিছু দেওয়ার জন্য ওই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না। এই জিনিসগুলো দেখে আমি খুশি, দলে যে ১৫-১৬ জন ক্রিকেটার আছে, তাদের নিয়ে আমি খুশি।'
ব্যাটিংয়ের সময় আঙুলে পাওয়া চোটের কারণ ঠিকভাবে বোলিং করতে পারেননি সাকিব, এটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রশ্নেও শান্ত দলগতভাবে খেলার ব্যাপারটিই বলেছেন, 'আঙুলের যে ব্যাপারটা, টেপ পেঁচিয়েছেন। বল লেগেছিল, রক্তও পড়েছে। যে কারণে টেপ প্যাঁচানো। আমি কখনও নির্দিষ্ট কারও পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। কারণ খেলাটা দলীয়। পুরা দলের অবদানেই কিন্তু একটা ম্যাচ জেতা সম্ভব। সব মিলিয়ে আমরা সবাই মিলে যদি অবদান রাখতাম, ভালো কিছু হতো। তো আলাদা করে ব্যক্তিগত কাউকে নিয়ে আমি চিন্তিত নই।'