বাগেরহাটে কাঁচামরিচের কেজি ৬০০ টাকা, বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম
বাগেরহাটের বাজারে কাঁচামরিচের কেজি ব্রিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। শুধু কাঁচামরিচ নয়– শাক-সবজি, মশলা, মাছ ও চালসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে জেলায়। এ অবস্থায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে নিত্যপণ্যের বাজারে।
আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে বাগেরহাট শহরের সবচেয়ে বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগেও ১৮০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো এই কাঁচামরিচ।
একইসঙ্গে বেড়েছে অন্যান্য সবজির দামও। ৫৫ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া পৌঁছেছে ৬০ টাকায়, ৪০ টাকার শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়, করল্লা ৮০ টাকা, ৭০ টাকার বেগুন ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া, টমেটো ২৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পোটল ৯০ টাকা, কচুরমুখি ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কথায়, ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই বাজারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম, তাই দাম বেড়েছে।
বিক্রেতা শেখ লতিফ জানান, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অনেক সবজির বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কাঁচা মরিচসহ সবজির দাম বেড়েছে।
বাজারে খালিদ হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, ১৫ দিন আগেও কাঁচামরিচ-সহ অন্যান্য সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। চলতি সপ্তাহে দাম অনেক বেড়ে গেছে।
"২০০ গ্রাম কাঁচামরিচ কিনেছি ১৪০ টাকায়। কীভাবে বেঁচে থাকবো আমরা?," বলেন এই ক্রেতা।
আরেক ক্রেতা সালমা আক্তার বলেন, "এক সপ্তাহেই মরিচের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বেছে থাকা কষ্ট হয়ে দাঁড়াবে।"
এদিকে, চালের দামও কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা করে। বুলেট ও স্বর্ণা বুলেট প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, চিকন চাল জাতভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে স্থানীয় মোটা চাল ও ভোজন চালের।
এছাড়া, মা ইলিশ রক্ষায় সমুদ্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাজারে সাগরের মাছের সরবরাহ কমেছে। সেই সুযোগে স্থানীয় উৎপাদিত মাছ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্প, নালোটিকা, চায়না পুঠি, সিলভারকার্প আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টেংরা মাছ, হরিণা চিংড়ি, চামি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০-২৮০ টাকার মধ্যে। চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, শোল মাছ ৩০০-৬০০ টাকা, টাকি মাছ ২০০-৩০০টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৭০০ টাকা, দাঁতনে মাছ ২০০-৫০০ টাকা, পুটি ৬০-১২০ টাকা এবং জাবা ২৬০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাগেরহাট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, বাজার দর নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
"আমরা নিয়মিত বাজারে অভিযান চালাচ্ছি। কোথাও অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে," যোগ করেন তিনি।