তেজগাঁও আড়তে আজ থেকে ঢুকবে ডিমের ট্রাক, সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যবসায়ীদের
দুদিন বন্ধ রাখার পর আবারও ডিম বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাধ্যবাধকতা মানার বিষয়ে 'নমনীয় মনোভাব' দেখানোর আশ্বাসে তারা ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে ডিম উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে আড়তদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে ও ডিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেজগাঁওয়ের ডিমের আড়ত থেকে প্রতিদিন ১৪-১৫ লাখ পিস ডিম সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত রোববার ও গতকাল সোমবার এ আড়তে ডিমের কোনো ট্রাক প্রবেশ করেনি। সরবরাহের ঘাটতির কারণে কারওয়ানবাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ কিছু বাজারে ডিমের সংকট তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে এক ডজন ডিম ১৬৫-১৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়।
সভায় উপস্থিত কয়েকজন আড়তদার ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেটি বাস্তবায়ন করতে পারলে ভোক্তা পর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম বিক্রি সম্ভব।
শাকসবজি, মাছসহ ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায় ডিমের বাড়তি চাহিদা তৈরি হওয়া ও দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে ডিমের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। যা সামাল দিতে সরকার সাড়ে চার কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে সেই ডিম এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি।
ব্যবসায়ীদের দাবি- তারা যাতে অভিযানের নামে যাতে হয়রানির শিকার না হন। কারণ, উৎপাদন পর্যায় থেকে বেশি দামে কিনলে আড়তদার কখনো কম মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তাও বাস্তবসম্মত নয়।
তারা জানান, এ অবস্থায় ভোক্তা অধিদপ্তর 'আপাতত' সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ীদের চাপ প্রয়োগ করবে না বলে সভায় জানিয়েছে। একইসঙ্গে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ঢাকায় যাতে ডিমের সরবরাহ বাড়ায় সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে।
ডিম উৎপাদনকারীরা জানান, সরকার চাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে কীভাবে সরাসরি ঢাকায় ডিমের সরবরাহ করা যায়। এজন্য বড় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
তেজগাঁও ডিমের আড়তদারদের নেতা আমানত উল্লাহ টিবিএসকে বলেন, 'আমরা সরকারকে কথা দিয়েছি আজ রাত থেকে ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখব। আড়তে ডিমের ট্রাক প্রবেশ করবে।'
তিনি বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তর আপাতত ডিমের সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নের বিষয়ে চাপাচাপি করবে না, এখানে ছাড় দেওয়ার কথা বলেছে।'
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে ডিমের সরবরাহ কীভাবে বাড়ানো যায়, সরকার সেটা নিয়ে কাজ করছে। সেখানে উৎপাদনকারীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ডিমের দাম খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১১.৮৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে ভোক্তাদের ১৫ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে।