দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের!
অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ার পর সাকিব আল হাসানকে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দল ঘোষণা করা হয়। বিসিবি থেকে জানানো হয়, বিদায়ী টেস্ট খেলতে আজ রাতে দেশে ফিরবেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। দেশে আসার জন্য রওনাও দিয়েছিলেন সাকিব, কিন্তু শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আবার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছানোর কথা ছিল সাকিবের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা দিয়ে তিনি দুবাই পৌঁছানোর পর সরকারের পক্ষ থেকে বার্তা পান। নিজের নিরাপত্তার জন্যই তাকে এই মুহূর্তে দেশে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সাকিব না আসার কথাই ভাবছেন। অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজটুয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে হয়তো দেশে আসতে পারবেন না। দুবাই থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন। এ ব্যাপারে বিসিবির কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুবাইয়ে এমনিতেই লম্বা ট্রানজিট সাকিবের। আজ বিকালে তার দেশের বিমান ধরার কথা ছিল। বর্তমানে দুবাইয়ে থাকা বাংলাদেশ অলরাউন্ডার অনলাইন সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, 'দেশে ফেরার কথা ছিল… কিন্তু এখন হয়তো ফিরতে পারব না সিকিউরিটি ইস্যুর জন্য, আমার নিজের নিরাপত্তার জন্যই…।' দেশে আসার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হলে সাকিব বলেছেন, 'এখন সিদ্ধান্ত চূড়ান্তই বলতে পারেন।'
সাকিবের দেশে আসার খবর জেনে বুধবার শিক্ষার্থীরা তার কুশপুত্তলিকা পোড়ান। সাকিব দেশে ফিরলে তারা বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণাও দেন। তাকে যেন স্টেডিয়ামে না ঢুকতে না দেওয়া হয়, এ জন্য বিসিবির কাছে আবেদন জানাবে শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে বিসিবিতে স্বারকলিপি জমা দিতে যাবেন তারা। অন্যান্য শিক্ষার্থীদের বিসিবিতে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন এসব শিক্ষার্থী।
ভারত সফরে টেস্ট অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। বিদেশে ঘোষণা দিলেও ঘরের মাঠ থেকে বিদায় নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানান দেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটার। যদিও তার দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে পারা নিয়ে ছিল অনিশ্চিয়তা। শুরুতে কঠোর বার্তা দেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এবং যুবও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সাকিবকে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা।
কদিন পরে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া পোস্টে অবস্থান পরিষ্কার করাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরব ভূমিকা পালনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন সাকিব। এর কদিন পর ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ অলরাউন্ডারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া, তার দেশে আসা বা দেশ ছাড়ার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই বলে জানান তিনি। এরপর সব ঠিকঠাকই এগোচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তায় আটকে গেল সাকিবের দেশে ফেরা।
জাতীয় দলে খেলার পাশাপাশি সংসদ সদস্যও ছিলেন সাকিব। গত জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচত হন তিনি। গত আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে নিহত গার্মেন্টকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় নাম আসে সাকিবের, তাকে ২৮ নম্বর আসামি করা হয়। ছাত্র আন্দোলনে নিরব ভূমিকায় থাকা দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছেন তিনি।