সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরল বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান বিলুপ্ত করে জাতীয় সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা থাকবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে।
রোববার (২০ অক্টোবর) সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা 'রিভিউ' পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ থেকে বাতিল ২ থেকে ৮ উপ-অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল (রিস্টোর) করে রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ রায় দেন।
আজকের এই রায়ের ফলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রইল এবং বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ফিরল বলে জানান শুনানিতে অংশ নেয়া সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এ রায়ের ফলে এখন থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের আভিযোগে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে বলে সাংবাদিকদের জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ থেকে ৮ পর্যন্ত বিধান বাতিল করা হয়েছিল। এগুলো পুনর্বহাল করেছেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল আনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরেরই ১৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে পাশ হয়।
পরবর্তীতে এর বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবীরা। ২০১৬ সালের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে বছরেরই ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে আপিল খারিজ করে রায় দেন। ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
পরে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।