হেফাজত তাণ্ডব ও বাবা-ছেলের কান্না
হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে আঙ্গার হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনা। আগুনে পুড়েছে জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার ঘর-বাড়িও। হেফাজত তাণ্ডবের শিকার হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব ভবনও।
হেফাজতকর্মীদের চালানো নৃশংসতার চিহ্ন হয়ে আছে আগুনে পোড়া স্থাপনাগুলো। গতকাল সোমবার ফেসবুকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ও তার বাবা ওয়ালিদ হোসেনের কান্নার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী হৃদয়বিদারক সেই ছবিটি শেয়ার করে হেফাজত তাণ্ডবের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা শহরের সরকারপাড়ায় হেফাজতকর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বাড়ি পরিদর্শনে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
এ সময় ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে শাহাদাৎ ও তার বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। হেফাজতকর্মীরা শাহাদাতের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ির কয়েকটি কক্ষের আসবাবপত্র এবং একটি টিনের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এছাড়াও হেফাজতকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাড়ি, ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন এবং আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাসেরের বাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন বলেন, "হেফাজতের তাণ্ডব পরিকল্পিত। পরিকল্পনা করেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে,"
এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।
গত রোববার (২৮ মার্চ) হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌরমিলনায়তন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, জেলা গণগ্রন্থাগার, পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতকর্মীরা।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন হেফাজত কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন,
"সবগুলো ঘটনাতেই মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। সিআইডি এবং পিবিআই'র বিশেষজ্ঞ টিম ডাকা হয়েছে। তারা প্রতিটি ঘটনাস্থল ঘুরে আলামত সংগ্রহ করবে। প্রতিটি ঘটনার মামলা বিশেষজ্ঞ টিম তদন্ত করবে।"