করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রোবট
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এবার রোবট মোতায়েন করেছে চীন। রাস্তায় টহল দেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করাসহ বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য এবার রোবট মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কেউ মাস্ক পরে না-হাঁটলেই, বকুনি দিচ্ছে রোবট।
চীনের উহান শহরের প্রধান প্রধান হাসপাতালগুলোতে সাংহাই এন্টারপ্রাইজের নকশা করা ও উৎপাদিত ৩০টি অসংক্রামক রোবট মোতায়েন করা হয়েছে।
এসব রোবটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সাংহাই টিএমআইরব এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যান জিং জানান, সাদা রোবটগুলোর ‘মাথায়’ একটি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড স্প্রেয়ার এবং ‘পেটে’ ৯টি আলট্রাভায়োলেট রশ্মি রয়েছে। মানুষ এবং যন্ত্রপাতির সহাবস্থান থাকা যেকোনো পরিবেশে একাধিক কাজ করতে সক্ষম এসব রোবট।
এছাড়া নেভিগেশন প্রযুক্তির সহায়তায় এই রোবটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যেকোনো বাধা এড়াতে সক্ষম।
এছাড়াও গত বুধবার স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ২১টি রোবট এবং ১০টি স্বয়ংক্রিয় বেড অনুদান দিয়েছে চীনের সবচেয়ে বড় রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিয়াসুন।
বর্তমানে আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসিইউ, নিয়ন্ত্রণ ক্ক্ষ এবং উহান শহরের বড় বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীদের বিভিন্ন সেবা দেয়ার জন্য এই জাতীয় রোবটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে আরও বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি এনেছে চীন। চিনা প্রযুক্তি সংস্থা এক বিশেষ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছেন। এতে ব্যবহারকারীরা জানতে পারবেন, তারা যে বিমানে উঠেছেন, বা ট্রেনে চেপেছেন, তাতে কোনও ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সফর করেছেন কি না।
বেইজিংয়ের কোনও কোনও হাউসিং কমিটি নিজেরাই ডেটা ট্র্যাকিং শুরু করেছে। এমনই একটি কমিটি জানিয়েছে, তাদের অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে ২৪০০ লোক থাকেন। প্রত্যেকের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে। চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনও বাসিন্দাদের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
সব সময় কাছে রাখা যায় এমন থার্মোমিটার বিলি করা হচ্ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে বিশেষ বুথ তৈরি করা হয়েছে। যাত্রী কিংবা পথচলতি লোকেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে জ্বর-সর্দিকাশি রয়েছে কিনা।
কোথাও কোথাও ‘ফিভার ডিটেকশন সিস্টেম’ বসানো হয়েছে। যন্ত্র ও ইনফ্রারেড ক্যামেরার মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। কারও গায়ে যদি ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাও থাকে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম বেজে উঠছে।
যন্ত্রটির নির্মাতা সংস্থার দাবী, এক মিনিটে ২০০ জনকে পরীক্ষা করতে পারে তাদের সিস্টেম।
যন্ত্রের সাহায্যে এ সব কর্মকাণ্ড চললেও এর পিছনে রয়েছে বহু লোক। একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা জানিয়েছে, তাদের ১০০ কর্মী দিনরাত এক করে কাজ করছেন।
চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি রোববার পর্যন্ত নতুন এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১১ জনে।
গত ২৪ ঘন্টায় চীনে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৩৯৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার। এর ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫৪৬ জনে।