বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে আস্ত গুহার মালিক এক কিশোর!
রাগ থেকে মানুষ কতরকম কাজই না করে। ছয় বছর আগে মা-বাবার সঙ্গে বাদানুবাদের পর রাগ করে বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়তে শুরু করেছিল এক স্প্যানিশ কিশোর। অবাক কাণ্ড হলো, আজ সেই ছেলে আস্ত একটি গুহার মালিক হয়ে গেছে!
১৪ বছর বয়সে আন্দ্রেস কান্তো প্রথম মা-বাবার সঙ্গে রাগ করে একটা কুঠার হাতে নিয়ে বাড়ির পেছন দিকটায় চলে যায়। ঝগড়ার কারণ, মা-বাবা তাকে ট্র্যাকস্যুট পরে শহরে যেতে দেবেন না। তাই বাড়িতে বসে গর্ত খোঁড়ার মাধ্যমেই মনের ক্ষোভ মেটাতে চেয়েছিল কান্তো। কিন্তু সে তখন ভাবেনি, গর্ত খোঁড়ার ব্যাপারটা একসময় তার কাছে আনন্দদায়ক হয়ে দাঁড়াবে।
প্রতিদিন ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরেই সে তার গর্তের ভেতরে গিয়ে বসে থাকত। ক্রমশ গর্ত খোঁড়ার নেশা তাকে চেপে বসে এবং একদিন এক বন্ধুকেও নিয়ে আসে এই কাজে সাহায্য করার জন্য। ফলে দুজনে মিলে আস্তে আস্তে গর্তটিকে একটি গুহায় পরিণত করে।
জেঙ্গার নিউজকে কান্তো বলে, 'আমার মা-বাবা চেয়েছিল গ্রামে যাওয়ার আগে আমি যেন পোশাক বদল করি। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ট্র্যাকস্যুট পরে আনন্দ করতে। যখন তারা বলল, এভাবে আমি বেরোতে পারব না; তখন বললাম, ঠিক আছে, আমি একাই দিব্যি ভালো থাকতে পারব। এরপরই বাড়ির পেছনের অংশে গর্ত খুঁড়তে শুরু করি।'
কান্তো ও তার বন্ধু দৈনিক ১৪ ঘণ্টা করে গর্ত খোঁড়ার পেছনে কাজ করত। যখন তারা সেখানে নিউমেটিক ড্রিল যোগ করল, কাজ আরও গতি এলো। প্রথমে তারা একটা বসার ঘর ও শোবার ঘর খোঁড়ে।
শুরুতে সব কাজ হাতেই সমাধা হতো, আবর্জনাও বালতিতে করে তোলা হতো। কিন্তু একসময় আন্দ্রেস সেখানে কপিকল ব্যবহার করে।
গুহার ছাদে বাঁকানো ও খিলানযুক্ত সিলিং ব্যবহার করা হয়েছে। ধ্বসে পড়া রুখতে ব্যবহৃত হয়েছে কংক্রিটের দেয়াল। বর্তমানে ২০ বছর বয়সী কান্তোর দাবি, নিজের গুহাকে দৃঢ় করার এসব নির্মাণ কাজে তার মাত্র ৫০ ইউরো (৬০ ডলার) ব্যয় হয়েছে।
তবে আন্দ্রেস স্বীকার করে, মাটির নিচে এমন একটা গুহায় থাকার কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এই যেমন, বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায়ই গুহা পানিতে ভেসে যায় এবং পোকামাকড়ও এখানে প্রায়ই বসতি গেড়ে বসে। কিন্তু নিজের আলাদা একটা জায়গা থাকার আনন্দ এসব অসুবিধাকে ছাপিয়ে যায় বলেই বিশ্বাস কান্তোর।
আন্দ্রেসের এখন দিনের অনেকটা সময়ই এখানে কাটে। কারণ নিজের সুবিধার জন্য গুহার মধ্যে ওয়াই-ফাই ও বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে হিটিং সিস্টেম বসাতেও ভুল করেনি কান্তো।
-
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল