ব্যাংকের লকারে রাখা ১৮ লাখ রুপি খেল উইপোকায়
ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ এলাকার বাসিন্দা অলকা পাঠক। গত বছরের অক্টোবর মাসে তিনি ব্যাংকের লকারে ১৮ লাখ রুপি জমা রেখেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই নারী লকার খুলে দেখেন, তার সকল নোট উইপোকায় খেয়ে ফেলছে!
দেশটির বারোদা ব্যাংকের আশিয়ানা ব্রাঞ্চে এমন দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে। নিজের কন্যার বিয়েতে খরচের জন্য অর্থগুলো কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সঞ্চয় করে লকারে রেখেছিলেন ঐ নারী।
কিছুদিন আগে ব্যাংকটির এক কর্মকর্তা অলকা পাঠকের সাথে যোগাযোগ করেন। মূলত লকারের চুক্তি নবায়ন করতে এবং 'নো ইউর কাস্টমার ডিটেইলস' পরিষেবাটি আপডেট করতে তাকে ব্রাঞ্চে ডেকে আনা হয়।
কিন্তু ব্যাংকের লকার খুলে অলকা পাঠক যা দেখেছেন, সেটার জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি দেখেন, তার মেয়ের জন্য তিল তিল করে জমানো সকল অর্থ উইপোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারাও ঘটনাটি দেখে হতবিম্ভ হয়ে যায়। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে যায় এবং গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ব্রাঞ্চের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়।
পরবর্তীতে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যেই ব্রাঞ্চটি থেকে ঘটনাটি সম্পর্কে ব্যাংকটির হেডকোয়ার্টারে একটি রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে অলকা পাঠক অভিযোগ করেন যে, ব্যাংকের কর্মকর্তারা তার সাথে ঠিকভাবে তথ্য শেয়ার করছেন না। এমনকি তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন কি-না, সেই সম্পর্কেও নিশ্চিত নন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্থ এই নারী বলেন, "আমি ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া কিংবা সাহায্য পাচ্ছি না। তাই ইস্যুটিকে সকলের কাছে তুলে ধরতে আমি গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করছি।"
তবে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার সর্বশেষ রুলসে বলা হয়েছে, ব্যাংকের লকারে কোনো প্রকার নগদ অর্থ সংরক্ষণ করা যাবে না।
বারোদা ব্যাংকের পক্ষ থেকে যে চুক্তিটি ছিল, সেখানেও ঠিক একই ধরণের শর্তের উল্লেখ ছিল। সেখানে বলা হয়, "লকার ব্যবহারের লাইসেন্সটি শুধু বৈধ উদ্দেশে ব্যবহার করা যাবে। যেমন, গয়না কিংবা নথির মতো মূল্যবান জিনিসপত্র সংরক্ষণের জন্য। নগদ কোনো অর্থ বা মুদ্রা গচ্ছিত রাখা যাবে না। নিষেধ হওয়া সত্ত্বেও অলকা কীভাবে নগদ অর্থ লকারে রাখলেন তার তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
অন্যদিকে ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বলা হয়, লকারে রাখা কিছু যদি চুরি কিংবা ডাকাতির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে হারানো যায়, তবে সেক্ষেত্রে ব্যাংক দায়বদ্ধ থাকবে। এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্রের বার্ষিক ভাড়ার ১০০ গুণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
একইসাথে অগ্নিকান্ড, বিল্ডিং ধসে কিংবা যেকোনো ধরণের জালিয়াতির কারণেও গচ্ছিত জিনিসপত্র নষ্ট হতে পারে। সেক্ষেত্রেও অনুরূপ ক্ষতিপূরণ প্রযোজ্য হবে। যদিও অলকা পাঠক দাবি করেন, রুপি উইপোকায় খেয়ে ফেলার বিষয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাকে আগে থেকে কিছু জানাননি।