১৫ দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছে লাইটার জাহাজের শ্রমিকরা
শতভাগ খাদ্য ভাতা, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক, ভারতগামী জাহাজের নাবিকদের ল্যান্ডিং পাস নিশ্চিত সহ ১৫ দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছে লাইটাজের শ্রমিক ইউনিয়ন সহ চারটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই কর্মসূচী পালিত হবে।
কর্মবিরতি চলাকালীন সময়ে লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকরা চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিানোঙ্গরে মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রাখার পাশাপাশি সারাদেশের নৌপথে লাইটার জাহাজ, কার্গো ট্রলার, বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখবে। তবে বরিশালে চরমোনাই মাহফিলে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে জাহাজ চলাচল এই কর্মসূচীর আওতার বাইরে থাকবে।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কাজে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী শেখ মোহাম্মদ ইছা মিয়া জানান, তার সংগঠনসহ বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন এবং বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এই কর্মসূচী পালন করবে।
তিনি বলেন, “২০১৭ সাল থেকে এসব দাবী নিয়ে আমারা কর্মসূচী পালন করে আসছি। এর আগে আরো তিনবার কর্মবিরতি কর্মসূচী পালিত হয়েছিলো। সেই কর্মসূচী থেকে মালিক এবং সরকার থেকে দাবি আদায়ের আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ায় পুনরায় কর্মবিরতি কর্মসূচীর ডাক দিয়েছি আমরা।”
কর্মসূচী উপলক্ষে মঙ্গলবার লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা কর্ণফুলী নদীতে সাম্পান মিছিল করে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতু থেকে কর্ণফুলী নদীর ১২ নম্বর ঘাট পর্যন্ত মিছিলটি ঘুরে আসে।
এদিকে চারটি সংগঠনের ডাকে লাগাতার কর্মসূচীর কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যাবে। বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজে নিয়োজিত থাকে লাইটার (ছোট জাহাজ)
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে পণ্য খালাস করছিলো ৪৬ টি মাদার ভ্যাসেল। এর মধ্যে ১৪ টি জেনারেল কার্গো, ৮টি ফুড গ্রেন, ২১টি সিমেন্ট ক্লিংকার, ২টি চিনি এবং একটি অয়েল ট্যাংকার। পণ্য খালাসের অপেক্ষায় আছে ২৯ টি জাহাজ। লাইটারেজ এবং নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হলে এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যাবে।
লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান, সারা দেশের বিভিন্ন নৌ রুটে ৩,০০০ লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গর থেকে পণ্য খালাসের কাজে নিয়োজিত থাকে ২৫০০ জাহাজ।