খুলনা থেকে বছরে ২৮২৩ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি
খুলনা থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিকটন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে মোট দুই হাজার ৮২৩ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। এই সময়ে মোট উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২১ হাজার ৭৫০ মেট্রিকটন যা জেলার চাহিদার চেয়ে ৬৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিকটন বেশি। একই বছরে জেলায় ২৫ হাজার ৩৭৫ মেট্রিকটন চিংড়ি মাছ উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নদী থেকে দুই হাজার ২৬৮ মেট্রিকটন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে।
সোমবার খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয় যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় জানানো হয়, দেশের জাতীয় জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান দুই দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭৪ হাজার ৪২ মেট্রিকটন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে পাঁচ হাজার ১৯১ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, সাগরে ৬৫ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলার সাতটি উপজেলার ২৩ হাজার ৮০ জন জেলের মাঝে এক হাজার ২৯২.৪৮ মেট্রিকটন ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারীকালে জেলার নয় হাজার ৮৫৮ জন মৎস্যচাষির মাঝে ১৪ কোটি ২০ লাখ ১৩ হাজার টাকার সরকারি অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি জেলায় ভেনামী চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষে অনুমতি দেয়া হয়েছে যার হেক্টর প্রতি উৎপাদন প্রায় ১০ মেট্রিকটন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। তিনি বলেন, খুলনা জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হয়। মাছচাষের ক্ষেত্রে কৃষি ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়গুলোও ভাবনায় রাখতে হবে। নদী ও উপকূলীয় এলাকা হতে চিংড়ির পোনা আহরণের সময় অন্য মাছের পোনা যেন ধ্বংস না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। সরকার ঘোষিত মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া যাবে না। সমুদ্রে মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত নৌযানগুলোয় আধুনিক যোগাযোগযন্ত্রসহ নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেশে মাছের উৎপাদন ও আহরণ বৃদ্ধি পেলে মৎস্যজাতপণ্য বিদেশে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে মৎস্য আহরণকারী ও চাষীদের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. খন্দকার আনিসুল হক, ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শেখ কামরুল আলমসহ মৎস্যচাষী, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী, মৎস্য ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল।