মেয়াদোত্তীর্ণ রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে এলসি খোলার আহ্বান গভর্নরের
সরকারি আমদানির জন্য লেটার অফ ক্রেডিট এলসি খোলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ রপ্তানি আয় (ওভারডিউ এক্সপোর্ট প্রসিড) প্রত্যাবাসনে ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাষ্ট্রায়ত্ব ৪ ব্যাংক, বিদেশি ৩ ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের ৫টিসহ মোট ১২টি ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইওদের সঙ্গে এক সভায় এ নির্দেশনা দেন গভর্নর। একইসঙ্গে তিনি এই ব্যাংকারদের কাছে দেশের ব্যাংকিং খাতকে সংস্কার করার ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে— এ ব্যাপারে পরামর্শও জানতে চেয়েছেন।
এছাড়া, এখন থেকে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১২০ রেটে গ্রাহকদের কাছে ডলার বিক্রি করতে পারবে বলে সভায় জানানো হয়।
এর আগে রোববার, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গভর্নরের মধ্যে একটি বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তারল্য বাড়ানোর উদ্যোগ হিসাবে আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে ২.৫ শতাংশে বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিদ্যমান ক্রলিং পেগ সিস্টেমের অধীনে, এখন ডলারের মাঝামাঝি মূল্য ১১৭ টাকা। অর্থাৎ, ব্যাংকগুলো এই রেটের সাথে ২.৫ শতাংশ যোগ করে তা ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের সব ব্যাংকগুলো মিলিয়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের মতো ওভারডিউ এক্সপোর্ট প্রসিড রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের কাছেই গত কয়েকবছর ধরে ৫৮৮ মিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট প্রসিড আটকে আছে।
সভায় উপস্থিত একাধিক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছেন, তাদের কাছে ব্যাংক খাত সংস্কার করার ক্ষেত্রে পরামর্শ পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া, বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে দেশীয় ব্যাংকগুলোর সম্পর্ক কীভাবে উন্নত করা যায়, এ বিষয়েও সভায় কথা হয়। পাশাপাশি, মূল্যস্ফীতি কমাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়— সেসব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, "আমাদের লোনগুলো রিকভারি করতে লিগ্যাল সিস্টেমটা আরও উন্নত করার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি। গভর্নর আমাদের জানিয়েছে, ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হবে না। শুধুমাত্র যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ব্যাংকগুলোর হাতে এখন বেশ ভালো ডলার লিকুইডিটি রয়েছে। বর্তমানে ডলারের রেটও ট্রান্সেকশন করার পর্যায়ে চলে এসেছে। তাই, গভর্নর আমাদের আন্তঃব্যাংক ডলার মার্কেট সক্রিয় করার নির্দেশনা দিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশের ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট (বিওপি) এর ফাইনান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স কীভাবে উন্নত করা যাবে, এ বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে।"