নতুন আইসক্রিম কারখানা স্থাপনে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে লাভেলো
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির ব্র্যান্ড লাভলো আইসক্রিম দ্বিতীয় আইসক্রিম উৎপাদন কারখানা স্থাপনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোম্পানিটির পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
নতুন কারখানা স্থাপনের জন্য লাভেলো ময়মনসিংহের ভালুকায় বিদ্যমান উৎপাদন কারখানাসংলগ্ন ৫৯.১৬ শতাংশ জমি কিনেছে।
নতুন আইসক্রিম উৎপাদন ইউনিটের মূলধনী যন্ত্রপাতি কেনার জন্যে কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী টেট্রা পাক সাউথইস্ট এশিয়া (সিঙ্গাপুর), এমইসি গ্রুপ (চীন), টেকনোআইস (ইতালি) ও ইয়ানতাই মুন কো. লিমিটেডের (চীন) সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করবে।
কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মহিউদ্দিন সরদার বলেন, 'এই সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি করার পরিকল্পনা করছি। পাশাপাশি বাজার হিস্যা বাড়ানোর লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে একটি বৃহৎ মার্কেট সেগমেন্টের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছি।'
উৎপাদন শুরু হওয়ার পর লাভেলোর নতুন কারখানা দৈনিক ২ লাখ ৫০ হাজার লিটার আইসক্রিম উৎপাদন করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা লাভেলোর বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুনে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বলেন, 'আমাদের বাজার-অবস্থানকে শক্তিশালী করতে এবং ক্রমাগর প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা দিতে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ এই সম্প্রসারণ।'
অভ্যন্তরীণ উৎস ও ব্যাংকের অর্থায়ন থেকে নতুন কারখানায় বিনিয়োগ করবে লাভেলো।
রোববার পর্যন্ত সাত কার্যদিবসে স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ বেড়ে ৮৯.৬০ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বিক্রি বাড়ার সুবাদে ৭৩ শতাংশ মুনাফা বেড়েছে বলে জানিয়েছে আইসক্রিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত লাভলো ৬.০১ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩.৪৭ কোটি টাকা ছিল।
লাভেলোর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের অর্থবছরের একই সময়ের ০.৪১ টাকা থেকে বেড়ে ০.৭১ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
মুনাফা বৃদ্ধির বিষয়ে কোম্পানিটি জানায়, আইসক্রিমের ব্যবসা মৌসুমভিত্তিক। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত গ্রীষ্ম শুরু হওয়ায় আইসক্রিম বিক্রি বেড়েছে।
তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১০.৮৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৯.৬৫ কোটি টাকা ।
২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কোম্পানিটির ৪১.১২ শতাংশ শেয়ার স্পনসর ও পরিচালকদের হাতে, ১৭.৮৮ শতাংশ শেয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতে এবং ৪১ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল।
বাজারসংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, বাংলাদেশে দেশীয় ব্র্যান্ডের আইসক্রিমের বাজারের আকার প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২০২৫ সাল নাগাদ এর আকার ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।