করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশে, দাবি চীনা বিজ্ঞানীদের
২০১৯ সালের গ্রীষ্মে তীব্র দাবদাহের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে বলে দাবি করেছেন চীনা একদল গবেষক।
গবেষকরা বলেছেন, তাদের কাছে যে প্রমাণ আছে তাতে ইঙ্গিত মিলে বাংলাদেশ, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, গ্রীস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, রাশিয়া বা সার্বিয়ায় এই ভাইরাসটি উদ্ভূত হয়েছে। খবর ডেইলি মেইলের।
শতাব্দীর সবচেয়ে মারাত্মক এই মহামারিটির উৎপত্তিস্থল চীনের উহান হিসেবে বিবেচিত হলেও চীন বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে। ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল সংক্রান্ত প্রচলিত ধারণা চীনের সীমানার বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশটির সর্বশেষ একাডেমিক প্রয়াস এটি।
চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের একটি দল যুক্তি দিচ্ছে, উহানে ছড়িয়ে পড়ার আগে ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে ভারতে ভাইরাসটি উদ্ভূত হয়েছিল। দূষিত পানির মাধ্যমে প্রাণী দেহ থেকে মানুষের দেহে এটি ছড়িয়ে পড়ে বলে তাদের যুক্তি।
তবে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড রবার্টসন, এই গবেষণাটিকে 'অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ' হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, 'এটি করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে কোনও ভ্যালু অ্যাড করে না।'
ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল নিয়ে এবারই প্রথম অন্য দেশকে দোষারোপ করছে না চীন। এর আগেও কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইতালি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই মূল সংক্রমণের স্থান হতে পারে বলে দেশটির বিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বর্তমানে চীনে করোনভাইরাসের উৎস খুঁজছে। বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন প্রমাণাদিও এখানে রোগটির উৎপত্তি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়।
তাদের গবেষণাপত্রে চীনা বিজ্ঞানীদের এই দল দাবি করেছে, তারা ফাইলোজেনেটিক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে কোভিড -১৯ এর মূল উত্স সনাক্ত করার চেষ্টা করেছে। এই পদ্ধতিতে ভাইরাস কীভাবে পরিবর্তিত (মিউটেট) হয় তা জানা যায়।
তারা বলেছে যে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করার পর উহান যে ভাইরাসটির 'আদি উৎস' তা নাকচ হয়ে যায়, বরং বাংলাদেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রীস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, রাশিয়া বা সার্বিয়ার দিকে ইঙ্গিত যায়।
গবেষকরা যুক্তি দেখাচ্ছেন, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই কম পরিব্যক্তি নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং এই দুই দেশ ভৌগলিক প্রতিবেশী, তাই সম্ভবত সেখানে প্রথম সংক্রমণ ঘটেছিল।
ভাইরাসটি একবার মিউটেট করতে কতটা সময় নেয় তা অনুমান করে এবং সেখানে নেওয়া নমুনাগুলির সাথে তুলনা করে তারা এমন তাত্ত্বিক ধারণাও দিয়েছে যে, ভাইরাসটি ২০১৯ সালের জুলাই বা আগস্ট এর দিকে এই অঞ্চলে প্রথম উদ্ভূত হয়েছে।
তারা আরও বলেছে, '২০১৯ সালের মে থেকে জুন পর্যন্ত উত্তর-মধ্য ভারত এবং পাকিস্তানের ওপর দিয়ে রেকর্ড তাপপ্রবাহ হওয়ায় এই অঞ্চলে মারাত্মক পানির সংকট তৈরি হয়েছিল।
'পানির অভাবে বন্য প্রাণীরা একে অপরের সঙ্গে পানির উপর মারাত্মক লড়াইয়ে জড়িত হয় যার ফলে ওই পানির মাধ্যমেই মানব-বন্য প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।'
'আমরা অনুমান করেছি যে SARS-CoV-2 এর (প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে) সংক্রমণ এই অস্বাভাবিক উত্তাপের তরঙ্গের সাথে যুক্ত হতে পারে।'