দেশের বাইরে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্ব সুবিধা বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র, সমলিঙ্গ দম্পতিদের জয়
কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থায় দেশের বাইরে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে, সমলিঙ্গের দম্পতিরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গিয়ে সারোগেসিসহ অন্যান্য মাধ্যমে সন্তান নিলে সেই সন্তানরাও নাগরিকত্ব লাভ করবে।
এর আগে, দেশের বাইরে জন্ম নেওয়া শিশুদের সাথে আমেরিকান বাবা অথবা মা'র রক্তের সম্পর্ক থাকলেই কেবল নাগরিকত্ব পেত এই শিশুরা। তবে, কৃত্রিম প্রজননের অনেক ক্ষেত্রেই আমেরিকান অভিভাবকের সাথে শিশুদের জেনেটিক্যাল সম্পর্ক থাকত না।
সাম্প্রতিক কয়েকটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। সারোগেসিসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় জন্মগ্রহণকারী সন্তানের অভিভাবকদের দায়ের করা মামলার রায়ের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার (ইউএসসিআইএস) অংশ হিসেবে নতুন এই নীতিমালা ঘোষণা করা হয়।
নতুন নীতিমালা অনুসারে, বিবাহিত দম্পতিদের বাইরে জন্মগ্রহণকারী সন্তানের ক্ষেত্রে অন্তত একজন অভিভাবক আমেরিকান হলে সন্তান নাগরিকত্ব ও পারিবারিক সুবিধা লাভ করবে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন এই নীতিমালার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বসবাসরত বহু পরিবারের জন্য নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
সমলিঙ্গ দম্পতিদের জয়
এলজিবিটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইমিগ্রেশন ইকুয়ালিটির নির্বাহী পরিচালক অ্যারন মরিসের মতে, নতুন এই সিদ্ধান্তে শত শত সমলিঙ্গ দম্পতি সুবিধা লাভ করবেন।
মরিস বলেন, "সন্তানদের স্বীকৃতি প্রদান না করার অর্থ তাদের বাবা-মায়ের বৈবাহিক সম্পর্ককে অসম্মান জানানো।"
পরিবারগুলোকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত দু'ভাবেই আঘাত করতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জেমস ডেরেক মাইজ এবং জনাথন গ্রেগ এমনই এক দম্পতি। ২০১৮ সালে সারোগেসি ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যে জন্ম নেয় তাদের কন্যা সিমোন।
জেমস এবং জনাথন দুজনেই আমেরিকান নাগরিক হলেও সিমোনকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়নি। সিমোনের সাথে শুধুমাত্র জনাথনের রক্তের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু জনাথন যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সশরীরে অবস্থান না করায় সিমোনের নাগরিকত্বও বাধাপ্রাপ্ত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সিমোনের দুই বাবাকেও তার অভিভাবকের স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে, অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয় এই পরিবারকে।
অবশেষে, আটলান্টার একজন ফেডারেল বিচারকের রায়ে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পায় সিমোন।
নাগরিকত্বহীন সন্তান জন্মদানের দুশ্চিন্তায় যেসব দম্পতি এখন পর্যন্ত সন্তান নেননি, তারা এখন কৃত্রিম প্রজনন সেবা নিতে আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন মাইজ।
মে মাসে একই ধরনের একটি পারিবারিক নীতিতে পরিবর্তন আনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট। সেখানে বলা হয়, 'আধুনিক পরিবারের বাস্তবতা' বিবেচনা এবং প্রজনন প্রযুক্তির উন্নতির কারণে ১৯৫২ সাল থেকে প্রচলিত নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি