বিল গেটসের ছায়া থেকে মেলিন্ডার সরে আসার যাত্রার নতুন অধ্যায়
মেলিন্ডা গেটস ২০১৩ সালে তাদের ফাউন্ডেশনের বার্ষিক চিঠির সহ-লেখক হতে চাইলে তার স্বামী বিল গেটসের সঙ্গে তার এ সম্পর্কিত আলোচনা বাকবিতণ্ডায় গড়ায়।
২০১৯ সালে প্রকাশিত তার বই 'দ্য মোমেন্ট অব লিফট'-এ ঘটনাটি নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, 'পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। বিল বলেছিল বিগত বছরগুলোতে বার্ষিক চিঠি লেখার প্রক্রিয়া ভালোভাবেই কাজ করছে, তা বদলানোর কারণ দেখছিল না সে।"
শেষ পর্যন্ত মেলিন্ডা কনট্রাসেপটিভ নিয়ে একটি আলাদা চিঠি লিখবেন এব্যাপারে সম্মত হন বিল গেটস, কিন্তু বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কাজ সম্পর্কিত মূল চিঠি তিনিই লিখেছিলেন।
পরবর্তী বছরের চিঠিতে যে তিনটি মিথ দরিদ্রদের উন্নয়নের অন্তরায়ের কারণ হিসেবে কাজ করে তার একটি নিয়ে লিখেছিলেন মেলিন্ডা, বাকি দুটি নিয়ে লিখেছিলেন বিল গেটস।
২০১৫ সালে তারা দুজনই চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।
"তার শিখতে হতো কীভাবে সমান হতে হয়, আমাকেও নিজস্ব পরিসর থেকে এগিয়ে গিয়ে সমান হতে হয় তা শিখতে হয়েছে," লিখেছিলেন মেলিন্ডা।
তার বইয়ে নিজেকে 'লাজুক' ও 'অন্তর্মুখী' বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
বিল গেটসের ছায়া থেকে সরে আসার লম্বা যাত্রা নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণার পর।
টেক্সাসে বড় হওয়া ৫৬ বছর বয়সী এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী নিউইয়র্কের এক ডিনার পার্টিতে বিল গেটসের সঙ্গে পরিচিত হন।
মেলিন্ডা তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের পরও বিল গেটসের সঙ্গে ফাউন্ডেশন পরিচালনার কাজ করে যাবেন। সেইসঙ্গে ইতোমধ্যে নারী অধিকারবাদী কর্মী হিসেবে তিনি নিজের আলাদা স্থানও তৈরি করে নিয়েছেন।
২০১৫ সালে তিনি পিভোটাল ভেনচারস প্রতিষ্ঠা করেন, নারী ও তাদের পরিবারের নিয়ে কাজ করা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এটি। তার বইও নারী ক্ষমতায়নের বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে।
"অবশেষে বিশ্ববাসী বুঝতে পারছে যে আমাদের অর্ধেক অংশ বাদ দিয়ে আমরা সামনে এগুতে পারবো না। এ ব্যাপারের তথ্যাদি একেবারে পরিষ্কার: নারীরা সমাজের দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে," তার বই নিয়ে লেখা একটি নোটে লিখেছিলেন তিনি।
তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে কেয়ারগিভারদের প্রতি উৎসাহব্যঞ্জক পোস্ট ও নবজাতক শিশুর যত্ন সম্পর্কিত বিভিন্ন পোস্ট দেখা যায়।
বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনে এই দম্পতি সম্পত্তির বণ্টনের ব্যাপারে একমত হয়েছেন উল্লেখ করলেও নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ জানানো হয়নি।
২০১৯ সালে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সঙ্গে ম্যাকেনজি স্কটের বিচ্ছেদের পর অ্যামাজনে তার শেয়ারের ৪ শতাংশ সম্পত্তি পান তিনি। ডিসেম্বরে স্কট জানিয়েছিলেন, ফুডব্যাংক ও কোভিড-১৯ জরুরি সেবা ফান্ডে তিনি ৪.১ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন।
ম্যাকেনজি স্কট ও মেলিন্ডা গেটস একসঙ্গে রোড ট্রিপে বেরিয়েছেন- তাদের নিয়ে এমনই অনেক হাস্যরসাত্মক মিম ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
তবে মেলিন্ডা তার পিভোটাল ভেনচারে এতোদিন ধরে বিনিয়োগ করে এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরে গেটস ফাউন্ডেশনের কাজে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন তিনি। তার কাজে তাই খুব একটা পরিবর্তন আসবে না, দৃশ্যপট দেখে এখন পর্যন্ত এমনটাই মনে হচ্ছে।
- সূত্র: রয়টার্স