‘ফাহিম হত্যায় অভিযুক্ত হাসপিল শৈশবে হিংস্র ছিল না’
যুক্তরাষ্ট্রে উদীয়মান টেকনোলজি উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশের শেয়ার-রাইডিং অ্যাপ 'পাঠাও'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহের অভিযুক্ত খুনি ও সাবেক সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলের শৈশব খুব একটা আনন্দের ছিল না। তার মাকে একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বলে বেশ ঝড় গেছে পরিবারটির ওপর।
তবে শৈশবে হাসপিলের মধ্যে সহিংসতার কোনো লক্ষণ ছিল না বলে দাবি করেছেন তার আন্ট মারজোরি সিনে। দ্য ডেইলি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।
নিজেরই চাকরিদাতাকে এমন নৃশংসভাবে হাসপিল খুন করেছেন, এ খবর জেনে তাই রীতিমতো অবাক হয়েছেন মারজোরি। কেননা, হাসপিলের মধ্যে এ রকম কোনো আচরণই তিনি দেখেননি।
যদিও মারজোরি দাবি করেছেন, পরিবারের দুঃসময়ে হাসপিল বরং বেশ শান্তশিষ্টই ছিলেন; তবু এ মাসের শুরুতে ফাহিমকে ঠাণ্ডা মাথায়, সুপরিকল্পিত ও নির্মমভাবে হত্যার দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৫২ বছর বয়সী মারজোরি বলেন, 'আমার ধারণা, পুলিশের কোথাও ভুল হচ্ছে। সে (হাসপিল) কখনোই নিজের আবেগ প্রকাশ করে না। সব সময়ই তাকে শান্ত আচরণ করতে দেখেছি। নিজে যা করতে চাইত, সেটা করে ছাড়ত।'
২১ বছর বয়সী হাসপিলের বিরুদ্ধে ঠাণ্ডা মাথায় ও সুপরিকল্পিতভাবে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
গত শনিবার ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্টের বিচারক সেকেন্ড-ডিগ্রি খুনের দায়ে অভিযুক্ত দেখিয়ে হাসপিলকে জামিন-অযোগ্য হিসেবে বন্দী রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
মারজোরি বলেন, হাসপিল যখন একেবারেই ছোট, তখনই মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হন তার মা। এ সময়ে একেক আত্মীয়ের বাসায় ঘুরে ঘুরে বড় হতে হয় তাকে। এরপর নানীর কাছেই বড় হতে থাকেন তিনি। নানী মারা যাওয়ার সময় হাসপিলের বয়স ছিল ১২ বছর।
নানীর মৃত্যুর পর হাসপিলের দায়িত্ব নেন মারজোরি। কিন্তু দিনে দিনে হাসপিল উদ্ধত হয়ে উঠতে থাকায় ১৭ বছর বয়সে এক পরিবারে তাকে দত্তক দেওয়া হয়। এর এক বছর পর মারা যান তার বাবা।
মারজোরি বলেন, 'সে আমার কথা শুনত না; তাই চলে গিয়েছিল। এতদিন পর ওর এমন খবর পেয়ে আমরা আদালতে গিয়েছিলাম। এ ঘটনা আমি মেনে নিতে পারছি না।'
এদিকে, লং আইল্যান্ডের ভ্যালি স্ট্রিম সেন্ট্রাল হাই স্কুলে হাসপিলের সহপাঠী ছিলেন রায়ান অ্যান্ড্রেস। যে সহপাঠীর মধ্যে আমেরিকার অন্যতম ভবিষ্যৎ ব্যবসায়ী নেতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখেছিলেন, তাকে খুনি হিসেবে আবিষ্কার করে হতভম্ব রায়ান। তিনি জানান, হাসপিলের মধ্যে হিংস্রতা কিংবা ক্রোধের কোনো লক্ষণ কখনোই দেখেননি।
রায়ান বলেন, 'যতদূর মনে পড়ে, সবার সঙ্গেই বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ওর। আমার মতোই সে যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পছন্দ করত।'