আদালতে প্রবীণ বাংলাদেশিকে উপহাস করার ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন মার্কিন বিচারক
বাংলাদেশি-মার্কিন নাগরিক বুরহান চৌধুরীকে আদালতে তিরস্কার করার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন বিচারক অ্যালেক্সিস ক্রট।
দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত বাংলাদেশি প্রবাসী বুরহান চৌধুরীকে তার বাড়ির বাইরে অতিরিক্ত আগাছা পরিস্কার না করার জন্য তিরস্কার ও জরিমানা করেছিলেন ওই মার্কিন বিচারক। পরবর্তীতে এ ঘটনা সমালোচিত হয় বিভিন্ন মহলে। বিচারকের সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের বিরুদ্ধে 'চেঞ্জ ডট অর্গ'-এ পিটিশনও স্বাক্ষরিত হয়। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেছেন, আদালতে নিজের ক্রিয়াকলাপে তিনি 'খুবই বিব্রত'।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারক অ্যালেক্সিস ক্রট স্বীকার করেছেন তিনি ১০ জানুয়ারি শুনানির সময় ৭২ বছর বয়সী বুরহান চৌধুরীকে উপহাস করেছিলেন।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ক্রোট বলেছেন, "আমি ভুল করেছি। আমি এক অপ্রত্যাশিত কাজ করেছি। আমি নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য খুবই বিব্রত বোধ করছি। আমি সেই ব্যক্তির কাছে এবং আমাদের পুরো সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।"
ক্রোট জানিয়েছেন, বিচারিক অসদাচরণ তদারকি করে এমন এক রাষ্ট্রীয় কমিশনের কাছেও তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেছেন।
বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন না রাখায় গত সপ্তাহে ক্ষুব্ধ বিচারক বুরহান চৌধুরীকে ১০০ মার্কিন ডলার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। ভার্চুয়ালি হওয়া সেই শুনানির ভিডিও ফুটেজ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।
অ্যালেক্সিস ক্রট বিচারিক অসদাচরণের জন্য রাষ্ট্রীয় কমিশনের কাছেও নিজেকে রিপোর্ট করেছেন।
তিনি বলেন, "কমিশনে নিজেকে রিপোর্ট করার কোনো আইনি দায়িত্ব আমার ছিলনা। কিন্তু আমি এটি করেছি, কারণ আমি মনে করি, ক্ষমা চাওয়ার এটিই সঠিক উপায়। আমি অন্যদের জন্য যে মান নির্ধারণ করেছি নিজের জন্যও আমি সেটিই ধরে রাখব।"
ক্রোটকে বেঞ্চ থেকে বহিষ্কার করার দাবিতে ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি লোক অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছিল।
২০১৯ সালে ক্যানসার ধরা পড়ে বুরহান চৌধুরীর। এরপর থেকেই বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে পিছিয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারি শুনানিতে বুরহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে জরিমানা ও উপহাস করেন বিচারক ক্রোট।
শুনানিতে ক্রট তাকে বলেছিলেন, "আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত। যদি আমি এ কারণে আপনাকে জেল দিতে পারতাম, তাহলে তাই দিতাম। আপনাকে এটি পরিষ্কার করতে হবে।"