চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে ‘ঋণের ফাঁদ’ হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে ভারত: গ্লোবাল টাইমস
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহায়তাকে 'ঋণের ফাঁদ' বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত। গত ২১ ফেব্রুয়ারি চীনের পিপল'স ডেইলির অধিভুক্ত চীনা পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসে ভারতের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ওয়াং ই-র লেখা 'চীনের বিআরআই সাহায্যের বিরুদ্ধে ভারতের 'ঋণ ফাঁদে'র অপবাদ হাস্যকর'- শীর্ষক প্রতিবেদনটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
রোববার শেষ হওয়া মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২২ চলাকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্কর চীনের তত্ত্বাবধানে তৈরি 'ঋণ ফাঁদ' সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, "আমাদের অঞ্চলসহ ঋণ নেওয়া দেশগুলোকে আমরা বড় অঙ্কের ঋণের দায়ে জর্জরিত হতে দেখেছি।"
জয়শঙ্কর চীনের আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করার বিষয়ে উপস্থিত দেশগুলোকে সতর্ক করেন।
তবে আলোচনায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আবদুল মোমেন চীনের সহায়তার বিষয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন। মোমেন বলেন, অন্যান্য অংশীদারদের কাছ থেকে পাওয়া সহায়তাগুলোই বরং বিভিন্ন শর্ত বয়ে আনে।
চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিরুদ্ধে ভারতের চীন বিরোধী শক্তি দীর্ঘদিন ধরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। জয়শঙ্করের 'ঋণ ফাঁদ'-ও এমনই আরেকটি ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
এশিয়ার অনেক নেতাই বারবার চীনের সহায়তায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সূত্রানুসারে দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীন শীর্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারী। ভারতের কয়েকজন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে ভারতীয় প্রভাব বিস্তারকারী অঞ্চল ধরে নেওয়ার পাশাপাশি চীনকে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচনা করেন।
চীনের প্রতি বৈরী মনোভাব ও ভূরাজনৈতিক কারণে ভারত রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)-র মতো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক উদ্যোগে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছে।
তবুও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এই রাজনৈতিক কারসাজি কিংবা ঋণ ফাঁদের অপবাদ অর্থনৈতিক আইন, বৃহত্তর অর্থনৈতিক একীকরণ ও বিশ্বায়নের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারবে না। মিউনিখ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বিশ্বব্যাপী বিভাজন এবং সংঘর্ষের কারণে বিপত্তি নেমে আসতে পারে বলেও সতর্ক করেন।
আশা করা যায় যে, ভারত আঞ্চলিক হস্তক্ষেপ ত্যাগ করে কোভিড-পরবর্তী সময়ে আঞ্চলিক সমৃদ্ধি বাড়াতে এশীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে।