অতীত বদলানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গেলেন জ্যোতিরা
স্বাগতিক দেশ হিসেবে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগহণ। প্রথম মিশনেই দুটি ম্যাচে জিতে আগমনী বার্তা দিয়ে রাখেন বাংলাদেশের মেয়েরা। যদিও সেই ধারায় হাঁটা হয়নি। ২০১৪ সালের পর আরও তিনটি আসরে খেললেও লড়াকু বাংলাদেশের দেখা মেলেনি। প্রথম আসরে আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়া জয় দুটিই সম্বল তাদের। এবার অতীত বদলানোর লক্ষ্য নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ খেলতে গেল বাংলাদেশ নারী দল।
পঞ্চম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে সোমবার দেশ ছেড়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। ৬টা ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে রওনা দেওয়া বাংলাদেশ ২৪ জানুয়ারি কেপটাউনে পৌঁছাবে। দেশ ছাড়ার আগে অফিসিয়াল ফটোসেশনে অংশ নেন ক্রিকেটাররা। এ সময় বিশ্বকাপে পেছনের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার প্রত্যয়ের কথা জানান জ্যোতি। এবার অন্তত দুই-তিনটি ম্যাচ জেতার লক্ষ্য বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের চার ক্রিকেটার। প্রথমবারের মতো আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাতেই আছেন। বিশ্বকাপে এই চার ক্রিকেটারের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ দলের জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি।
প্রস্তুতি ক্যাম্প করতে বেশ আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় গেল বাংলাদেশ দল। ক্যাম্পের অংশ হিসেবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে দুটি অনুশীলন ম্যাচও খেলবে তারা। ৬ ফেব্রুয়ারি কেপটাউনে পাকিস্তান ও ৮ ফেব্রুয়ারি স্টেলেনবোশে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শেষবারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নেবেন সালমা-জাহানারারা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শুরু ১২ ফেব্রুয়ারি, প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ১০ দলের অংশগ্রহণের বিশ্বকাপ ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি।
অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলে এবারের বাংলাদেশ দল দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ। প্রথম বিশ্বকাপ থেকে খেলা আসা সালমা খাতুন, জাহানারা আলম, ফাহিমা খাতুন, রুমানা আহমেদদের সঙ্গে দলে জায়গা হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মারূফা আক্তার, দিলারা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, দিশা বিশ্বাসদের। এই চার ক্রিকেটারই দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম নজর কেড়েছেন।
তরুণদের নিয়ে আশার কথা জানিয়ে জ্যোতি বলেছেন, 'ওরা ইতোমধ্যে ওখানে ম্যাচ খেলেছে। আমাদের চেয়ে ওরা ভালো ধারাতে আছে। তারা একটা ভালো ছন্দের ভেতর আছে। মারূফাকে দেখেছি নিয়মিত ভালো বল করেছে, নিউজিল্যান্ডেও ভালো পারফর্ম করেছে। দিশা তো করছেই ভালো। সব মিলিয়ে যে চারজনকে নেওয়া হয়েছে...স্বর্ণা তো বরাবরই ভালো ব্যাট করছে, যেটা আমাদের দলের জন্যও লাভজনক হবে।'
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা স্বর্ণা-মারূফাদের কাছ থেকে ভালো শেখার আছে বলে মনে করছেন জ্যোতি। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'যেহেতু তারা ইতোমধ্যে ওখানে আছে, আমার কাছে মনে হয় একাদশে সুযোগ পেলে দলের জন্য সাহায্য করবে অনেক বেশি। আমার কাছে এটাও মনে হয় যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৯ ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া অনেক ভালো হবে। ভালোর থেকে ভালো শেখা উচিত।'
আগের রেকর্ড ভুলে এবারের আসরে কয়েকটি জয় তুলে নেওয়ার প্রত্যয়ের কথা জানিয়ে জ্যোতি বলেন, 'অনেকদিন আগে আমরা ম্যাচ জিতেছি। সবারই ইচ্ছা এবার যেন আমরা রেকর্ডটা ভেঙে দেই। আমাদের মোমেন্টাম যেটা বাইরে আছে, যদি একটা ভালো ছন্দ পাই প্রথম ম্যাচে, সেটা চালিয়ে নিতে পারলে (বদলে যাবে অবস্থা)। যাদের সঙ্গে এবার খেলা, গ্রুপ পর্বে দুই-তিনটা ম্যাচ বের করে নিয়ে আসা সম্ভব আমার মনে হয়। শুধু একটা মোমেন্টাম দরকার আমাদের।'
বাংলাদেশ দল এবার খুলনায় অনুশীলন ক্যাম্প করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার চিরাচরিত উইকেটের কথা মাথায় রেখে অনুশীলনে পেস সহায়ক উইকেটে অনুশীলন করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রস্তুতি নিয়ে জ্যোতি বলেছেন, 'খুলনার উইকেট পেস বোলিং সহায়ক, ওইটা দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেক বেশি সাহায্য করবে। আপনারা জানেন আমরা ওখানে খুব ভালো উইকেট পাব, স্পোর্টিং উইকেটই কিন্তু একটু বাউন্স থাকবে হয়তো, যেটা ব্যাটেও খুব ভালো আসে। সেটার জন্যই খুলনায় যাওয়া। প্রস্তুতি ম্যাচগুলো আমরা ছেলেদের সঙ্গে খেলেছি। পেসের বিপক্ষে হয়তো ভুগতে হয়েছে কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো পরের খেলায় আমাদের সাহায্য করবে।'