গ্র্যাজুয়েট সাকিব বললেন, ‘আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হলো’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ২০০৬ সাল থেকে। বয়সভিত্তিক বা ঘরোয়া ক্রিকেটের হিসাব করলে সময়টা আরও লম্বা। দীর্ঘ এই সময়ে ক্রিকেটেই প্রায় সব মনোযোগ দিয়ে রেখেছেন সাকিব আল হাসান। তবে সঙ্গে লেখাপড়াটাও চলেছে অনিয়মিতভাবে। বেশ দেরিতে হলেও অবশেষে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার এখন গ্র্যাজুয়েট। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ থেকে বিবিএ (স্নাতক) সম্পন্ন করেছেন সাকিব।
৩৬ বছর বয়সে স্নাতক সম্পন্ন করলেন বাংলাদেশ প্রাণ ভোমরা। বয়স যতোই চলুক, ক্রিকেটের সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারের পাশাপাশি লেখাপড়ায় এটা তো বড় অর্জনই তার জন্য! সেই অর্জনের উদযাপনে সাকিব শামিল হয়েছেন। এআইইউবি- এর ঢাকার ক্যাম্পাসে আয়োজিত সমাবর্তনে রোববার অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ২০০৯-১০ সেশনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ভর্তি হন সাকিব, তার স্নাতক শেষ হলো ২০২৩ সালে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন সিলেটে। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ১৮৩ রানের ব্যবধানে আইরিশদের হারিয়ে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ, সাকিব খেলেছেন ৯৩ রানের দারুণ এক ইনিংস। রোববার বিশ্রাম দেওয়া হয় দলকে, এদিন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ছাড়া কাউকে অনুশীলন করতে দেখা যায়নি। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে একদিনের বিশ্রাম মেলায় শিক্ষা জীবনের অর্জন উদযাপন করতে ঢাকা গিয়েছেন সাকিব। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজই সিলেটে ফিরবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার।
সাকিবের সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার ছবি, ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। যেখানে সমার্তনের কালো-সুবজ গাউন পরা অবস্থায় দেখা যায় তাকে। এসব ছবি, ভিডিওর কল্যাণে সাকিবের নামের বিশেষ অংশ বা বংশ উপাধী জানা গেছে। গোটা দুনিয়া তাকে সাকিব আল হাসান নামে চিনলেও এআইইউবি- এর ছাত্র হিসেবে তার নাম খন্দকার সাকিব আল হাসান, সাকিবের আইডি নম্বর- ০৯-১৪১৭৭-২।
সমাবর্তনে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন তিনি। স্নাতক শেষ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত সাকিব তার বক্তব্যে বলেন,, 'অনেক বছর হয়েছে আমার ক্রিকেট খেলার, তখনও আম্মা যখন ফোন করতো, জিজ্ঞেস করত যে পড়াশোনার কী অবস্থা। আজকে আমি খুবই খুশি, খুবই আনন্দিত যে এবং খুবই গর্বিত যে, অবশেষে আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হলো। খেলার মাঠে হয়তো বেশি কিছু অর্জন আছে আমার, তবে এটা সবসময় আমার স্বপ্ন ছিল ছিল।'
'খুব বেশি কিছু বলার নেই। সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগছে। আশা করি সবার জীবন সামনে এগিয়ে যাবে। শুধু একটা কথাই বলব, যখন আপনারা স্বপ্ন দেখবেন, স্বপ্নটা বড় দেখবেন। লক্ষ্য নির্ধারণ করে সততার সাথে কাজ করবেন, আমি নিশ্চিত আপনাদের সবার স্বপ্ন পূরণ হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব।' যোগ করেন সাকিব।
২২ গজে সাকিব কখনও বোলারদের জন্য যম, কখনও ব্যাটসম্যানদের কাছে অস্বস্তির কারণ। প্রেজেন্টেশন বা সংবাদ সম্মেলনে সব সময়ই নির্ভার দেখায় তাকে। সেই সাকিবই সমাবর্তনে মাইক্রোফোনের সামনে হয়ে পড়লেন নার্ভাস। জানালেন, সমাবর্তনের হ্যাট পেয়ে টেস্ট অভিষেকের ক্যাপ পাওয়ার অনুভূতি হয়েছে তার, 'আমি প্রশ্নোত্তর পর্ব ভালো পারি। তবে বক্তৃতা ভালো পারি না। বক্তৃতায় আমার খুব সমস্যা হয়। আমি খুবই নার্ভাস। এমন মনে হচ্ছে যেন, টেস্ট অভিষেকে যখন ক্যাপটা পেয়েছিলাম, তখন যে অনুভুতি ছিল, আজকে এরকমই মনে হচ্ছে (সমাবর্তনের) হ্যাট পেয়ে।'