বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো আয়ারল্যান্ড
নতুন দর্শন আক্রমণাত্মক মনোভাবেই ব্যাটিংয়ের শুরু হয়। কিন্তু এদিন চাওয়া মতো হয়নি, দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও রনি তালুকদার ফেরেন দ্রুতই। ভাঙনের সুরে দিক হারান নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়রাও। নাসুম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে শামীম হোসেন পাটোয়ারী দিকহারা দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেও তাই সেটা যথেষ্ট হয়নি। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে আয়ারল্যান্ডকে দারুণ এক জয় উপহার দিলেন অধিনায়ক পল স্টার্লিং।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ব্যাটে-বলে শাসন করে ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে আইরিশরা। এই সিরিজে এটাই তাদের একমাত্র জয়। দাপুটে এই জয়ে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেতে হলো না সফকারীদের, বাংলাদেশ সিরিজ জিতলো ২-১ ব্যবধানে।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে এদিন ভালো শুরু হয়নি বাংলাদেশের, টপ অর্ডারও হয় ব্যর্থ। কয়েকটি ছোট ইনিংস ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীর হাফ সেঞ্চুরিতে ১৯.২ ওভারে ১২৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ম্যাচসেরা পল স্টার্লিংয়ের একার ব্যাটিং ঝড়েই আয়ারল্যান্ডের জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়, শেষ করেন হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার। ৩৬ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় আইরিশরা।
ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আয়ারল্যান্ডের। দলীয় ১৭ রানে ওপেনার রস এডেয়ারের স্টাম্প উপড়ে নেন দারুণ বোলিংয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতা বাংলাদেশ পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রথম উইকেট পতনের চাপ অবশ্য বুঝতে হয়নি সফরকারীদের। শুরু থেকেই দাপুটে ব্যাটিং করতে থাকা স্টার্লিং একই ছন্দে খেলে যেতে থাকেন।
দলীয় ৪১ রানে লরকান টাকার আউট হওয়ার পর স্টার্লিং যেন আরও মারকুটে মেজাজে চলে যান। অসাধারণ সব শটে বাংলাদেশের বোলারদের কোণঠাসা করে ফেলেন তিনি। দলকে শতরান ছাড়িয়ে দিয়ে আউট হওয়া আইরিশ অধিনায়ক ৪১ বলে ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন। টেক্টর ১৪ ও ক্যাম্ফার ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তাসকিন, শরিফুল ও রিশাদ একটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ পুরো ইনিংস ধরে ধুঁকেছে। শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে দুর্বার শুরু এনে দেওয়া লিটন ও রনি আজ পারেননি দলকে পথ দেখাতে। তুলে মারতে গিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই আউট হন লিটন। পরের ওভারের শেষ বলে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। দীর্ঘদিন পরে জাতীয় দলে ফিরে ছন্দময় সব ইনিংস খেলে যাওয়া রনিও পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন।
দ্বিতীয় ওভার থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বাংলাদেশ ষষ্ঠ ওভারে অধিনায়ক সাকিবকেও হারায়। পরের ওভারে থামেন তাওহিদ হৃদয়। ৪১ রানের মধ্যেই নেই ৫ উইকেট, এখান থেকে দলের হাল ধরেন শামীম। তার সঙ্গে অনেকটা সময় লড়াই করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। অষ্টম উইকেটে ইনিংসসেরা ৩৩ রানের জুটি গড়েন শামীম-নাসুম। এই জুটিতেই মূলত ১০০ পেরোয় বাংলাদেশ।
নাসুমকে এক পাশে রেখে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যাওয়া শামীম ৪২ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ইনিংসসেরা ৫১ রান করেন, এটাই তার প্রথম আন্তর্জাতিক হাফ সেঞ্চুরি। এ ছাড়া রনি ১৪, হৃদয় ১২ ও নাসুম ১৩ রান করেন। বাকিরা যোগ দিয়েছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। আয়ারল্যান্ডের সাতজন বোলিং করে সবাই উইকেটের দেখা পান। সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন মার্ক এডেয়ার। ২টি উইকেট নেন ম্যাথু হামফ্রেস। একটি করে উইকেট পান ফিওন হ্যান্ড, হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফার, বেন হোয়াইট ও গ্যারেথ ডেলানি।