বড় লিড নিয়ে শুরুতেই আয়ারল্যান্ডকে চেপে ধরলো বাংলাদেশ
যেভাবে ইনিংসের শুরু হয়েছিল, তাতে বড় আশা করার সুযোগ ছিল না। আবার দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও ভালো হয়নি। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম উইকেটে নিমে মুহূর্তে পাল্টে দিলেন সব হিসাব নিকাশ। সাকিব কাছে গিয়ে না পারলেও মুশফিক পূর্ণ করলেন সেঞ্চুরি, লিটন কুমার দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজও রাখলেন অবদান। সব মিলিয়ে বড় লিড নিয়েই থামলো বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে দ্রুত রান তোলা বাংলাদেশ ৮০.৩ ওভারে ৩৬৯ রানে অলআউট হয়েছে। প্রথম ইনিংসে ঘরের মাঠের দলটি পেয়েছে ১৫৫ রানের লিড। প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সামনে এখন ইনিংস ব্যবধানে হার থেকে বাঁচার চ্যালেঞ্জও। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ রানেই তিন উইকেট হারিয়েছে আইরিশরা।
প্রথম দিন ১০ ওভারে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ, ২ উইকেটে তোলে ৩৪ রান। নাজমুল হোসেন শান্ত রান করার আগেই থামেন, দিনের শেষ বলে আউট হওয়া তামিম ইকবাল করেন ২১ রান। দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালো ছিল না। এদিন আর ৫ রান করে বিদায় নেন ৩৪ বলে ১৭ রান করা সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
৪০ রানে ৩ উইকেট হারালেও অবশ্য দলকে কোনো চাপই বুঝতে দেননি মুশফিক-সাকিব। মুশফিক স্বাভাবিক গতিতে ব্যাট চালালেও সাকিব খেলেন আক্রমণাত্মক হয়ে। মুহুূর্তে চাপ উধায়। বাংলাদেশের স্কোরকার্ড হতে থাকে সমৃদ্ধ। চতুর্থ উইকেটে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক-সাকিব।
এই জুটি গড়ার পথে ৪৫ বলে ৯টি চারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। বাংলাদেশষ এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথেই, কিন্তু ৮০ পেরিয়ে থামতে হয় তাকে। ৯৪ বলে ১৪টি চারে ৮৭ রান করেন সাকিব। ছয় বছর ধরে টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব, ২০১৭ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের শততম টেস্টে ১১৬ রানের ইনিংস খেলার পর আর তিন অঙ্কে যাওয়া হয়নি তার।
সাকিবের বিদায়ের পর লিটন কুমার দাসের সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। এ সময় টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ১৩৫ বলে ১৩টি চার ও একটি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দ্রুততম। আজ হাফ সেঞ্চুরির মতো সেঞ্চুরিতেও চার মেরে পৌঁছান মুশফিক।
মুশফিকের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়লেও খুব বেশিক্ষণ উইকেটে ছিলেন না লিটন। ওয়ানডে মেজাজে ৪১ বলে ৮টি চারে ৪৩ রান করে থামেন তিনি। আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে আউট হন মুশফিক। এর আগে ১৬৬ বলে ১৫টি চার ও একটি ছক্কায় ১২৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
মুশফিকের বিদায়ের পর মিরাজই যা লড়েছেন। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ৮০ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৫ রান করেন। টেস্টে এটা তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ ৪ রান করে করেন। আয়ারল্যান্ডের অফ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ১১৮ রান খরচায় ৬টি উইকেট নেন। টেস্টে এটাই তার সেরা বোলিং, আয়ারল্যান্ডেরও সেরা। মার্ক এডেয়ার ও অভিষিক্ত বেন হোয়াইট ২টি করে উইকেট নেন।